জুমবাংলা ডেস্ক : কিছুদিন আগেও খাবারের সন্ধানসহ বিভিন্ন কারণে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে চলে আসতো বাঘ। গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে যেতো গবাদিপশু। আতঙ্কিত গ্রামবাসী পিটিয়ে হত্যা করতো বাঘ। এ পরিস্থিতি উত্তরণে লোকালয়ে বাঘ আসা ঠেকাতে সুন্দরবনের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের ফেন্সিং দিয়েছে বন বিভাগ। আরও ২০ কিলোমিটার এলাকায় এই ফেন্সিং দয়ার কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে নাইলনের ফেন্সিং বা নেট দিয়ে সেখানকার বনবিভাগ এর সুফল পেয়েছে।
বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ ও সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের’ অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের আওতায় নাইলনের ফেন্সিং দেয়া হচ্ছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাঝেমধ্যে খাবারের সন্ধানে বাঘ লোকালয়ে চলে আসে এবং গবাদিপশু ধরে নিয়ে যায়। লোকজন বিভিন্ন সময় লোকালয়ে আসা বাঘ পিটিয়ে হত্যা করেছে। বন সংলগ্ন বেশ কয়েকটি নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বাঘ সহজে লোকালয়ে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া মাঝেমাঝে বন্য শুকর এবং হরিণও লোকালয়ে চলে আসে। এ অবস্থায় লোকালয়ে বাঘসহ অন্য বন্যপ্রাণী ঢোকা ঠেকাতে নাইলনের ফেন্সিং দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বছরের অক্টোবরে মাঠ পর্যায়ে এই কাজ শুরু হয়।
প্রকল্প পরিচালক ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনের যেসব এলাকায় বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব বেশি সেখানে ফেন্সিং দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ধানসাগর, শরণখোলা, কৈখালী ও কৈলাশগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার ফেন্সিং সম্পন্ন হয়েছে। আরও ২০ কিলোমিটার এলাকায় ফেন্সিং দেয়ার কাজ চলছে। সুন্দরবনের ভারতের অংশে অনেক আগেই ওই দেশের বনবিভাগ এই ফেন্সিং দেয়।
তিনি আরও জানান, ফেন্সিং তদারকির জন্য ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের সদস্যদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। যাতে বনজীবী কিংবা দুষ্কৃতকারীরা তা ছিঁড়ে না ফেলে। কোথাও ছিঁড়ে ফেললে তারা যাতে দ্রুত বন বিভাগকে জানায় সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাঘ শুমারি করা হয়। বাঘ শুমারিতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ২৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। আগামী ৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাঘ শুমারির ফলাফল প্রকাশ করবেন। ২০১৮ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১১৪টি, যা ২০১৫ সালে ছিল ১০৬টি। তবে এবার বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।