জুমবাংলা ডেস্ক : হাঁস-মুরগি, কবুতর, পাখি, কুকুরসহ নানারকমের পশুর সঙ্গে তার সখ্য। একেক সময় লালন পালন করেন পছন্দ তালিকার যেকোনো পশুকে। নিজের খাওয়ার চিন্তা না করলেও পালিত পশুর খাবার জোগাড় তার চাই-ই। এজন্য তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
এমন পশুপ্রেমিক ব্যক্তি শাহ আলম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী ইউনিয়নের বাসুদেববাড়ী গ্রামের মৃত সর্বেশ আলীর বড় ছেলে। এলাকার সবাই পাগল মনে করলেও অনেকেই তাকে পেটেভাতে কাজে লাগান। যার কাজ করেন তার দেওয়া খাবার থেকে বাঁচিয়ে নিজের পালিত প্রাণীটির জন্য নিয়ে আসেন। কেউ দয়া করে দুই-চার পয়সা দিলে তার সিংহভাগ শাহ আলম সঙ্গী পশুর জন্য ব্যয় করেন।
সংবাদপত্র পরিবেশক আব্দুল হাকিম জানান, এক পশুতে তিনি স্থির না। খাবার দিতে না পারা অথবা অন্য কোনো কারণে সঙ্গী পশু তিনি পালটিয়ে ফেলেন। ইতোমধ্যে শাহ আলমকে কুকুর বিড়াল কবুতরসহ নানা প্রাণী পালতে দেখা গেছে। হাঁস মুরগি, কবুতর ছাগল পালটিয়ে এবার তিনি সঙ্গী করেছেন একটি ঘোড়া।
শাহ আলমের কাছ থেকে জানা গেল, বছর দেড়েক আগে জামালপুরের বিখ্যাত ও দেশের অন্যতম ঘোড়ার হাট তুলসীপুর হাট থেকে কষ্টে জমানো সাড়ে ৭ হাজার টাকায় ঘোড়াটি ক্রয় করেছেন তিনি। সব সময় এই ঘোড়াকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন। জয়ী হতে না পারলেও খবর পেলেই বিভিন্ন এলাকার ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। কাজ না থাকলে মাঠে বেঁধে বা ছেড়ে দিয়ে কাছে কোথাও বা বাজারে বসে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, দরিদ্র বাবার বড় ছেলে শাহ আলম অযত্নে বড় হয়েছেন। সবাই সংসারে টিকলেও তিনি অনেকটা সংসার বৈরাগী। তাই ঘোড়াটি নিয়েই তার বর্তমান সংসার। যেখানে যান সেখানেই ঘোড়া সঙ্গে থাকে। কোথাও মজুর খাটতে গেলে এই ঘোড়াই তার সঙ্গী। গৃহস্থের কাজ করার সময় পাশের মাঠে বাধা অথবা ছেড়ে দেওয়া থাকে।
সম্প্রতি ভোরে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্বরে প্রতিদিনের শ্রমের বাজারে ঘোড়াটি সঙ্গে নিয়ে গৃহস্থের অপেক্ষা করছেন। যিনি দিন হাজিরায় তাকে মাঠে কাজ করিয়ে মজুরি দেবেন। দিন শেষে ঘোড়া ও তার নিজের দুই এক দিনের খাবারের জোগাড় হবে।
তিনি জানান, কাজ পেলে যে মজুরি জোটে তার বেশির ভাগই ঘোড়ার যত্নে ব্যয় করেন শাহ আলম। অনেকেই তাকে মজুরিহীন শুধু পেটেভাতে কাজ করায়। এতে তিনি অখুশি বা কষ্ট নেন না। ঘোড়াকে সঙ্গী করে এভাবেই জীবনের আবর্তে আপাতত শাহ আলমের পথ চলছে। অনাগত ভবিষ্যতে হয়ত অন্যকোনো পশু তার সঙ্গী হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।