লাইফস্টাইল ডেস্ক : যখন কেউ জানতে পারেন তিনি একজন বিবাহিত মানুষের প্রেমে পড়েছেন, তখন তাঁর মধ্যে দুটো মিশ্র অনুভূতি কাজ করে। একটি হলো—তীব্র লজ্জা, অন্যটি অপরাধবোধ। কারণ কেউ না জানলেও তিনি নিজে জানেন, তাই নিজের বিবেকের কাছে লজ্জিত পান। মানুষ যখন এ ধরনের লজ্জা পায়, তখন নিজেকে আরও গুটিয়ে নেয়। এ সময় যদি জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সেই বোঝাপড়ার জায়গাটি থাকে, তাহলে তাকে বলে দেওয়াই ভালো। অথবা কাউন্সেলিংয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখা প্রয়োজন, প্রতিটি মানুষ স্বতন্ত্র। ফলে তার দাম্পত্য চাহিদাও ভিন্ন। কিন্তু একটা জায়গা সবাই চায়, সেটা হলো ভালোবাসা পেতে এবং দিতে। এ ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের কথায় বলা যেতে পারে, ‘দোহাই তোদের, একটুকু চুপ কর্/ ভালোবাসিবারে দে আমারে অবসর।’
কিন্তু আমরা পরস্পরকে প্রাইভেসি দিতে চাই না। গোপনীয়তা এবং প্রাইভেসির মধ্যে যে পার্থক্য আছে—এই সূক্ষ্ম ব্যবধানটা বুঝতে পারার মধ্যে দাম্পত্য সাফল্য লুকিয়ে আছে। অভিমান করে হয়তো বলা যেতে পারে, ‘ও, আমাকে কিছু বলছে না কেন?’ এ ক্ষেত্রে বলতে হয়, নিজের ভালোর জন্য নিজের সঙ্গে বোঝাপড়াটা জরুরি। সেখানে হালুম বলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ার কোনো মানে হয় না।
বিবাহিত কেউ রোমান্টিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলে করণীয় কী?
একটা সহজ কথা মনে রাখা জরুরি—‘চিটিং ইজ আ চয়েস’। যিনি আপনাকে রোমান্টিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন, তিনি কি তাঁর পূর্বের সম্পর্কে চিটিং করছেন? যিনি একজনের সঙ্গে চিটিং করতে পারেন, তিনি আপনার সঙ্গেও করতে পারেন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা নিজের জন্যই জরুরি। কারণ, আপনি নিজেই আপনার ভালো বন্ধু। আপনার সঙ্গে আপনার এই একক যাত্রা দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত। তাই নিজেকে ভালো রাখার জন্য এই প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, সাময়িক আনন্দের জন্য আপনি কতটুকু চিটিং গ্রহণ করবেন? কারণ আপনার ওপর মন উঠে গেলে এই মানুষটি যদি নতুন কাউকে আবার রোমান্টিক প্রস্তাব দেন, তখন সেটা নিতে পারবেন তো? তাই নিজের চোখে আয়না ধরাটা প্রয়োজন। আমি আসলে কতটুকু সৎ আমার সঙ্গে!
রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলতে হয়, ‘মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া, এই দুইয়ের যে তফাত আছে।’ তাই নিজেকে প্রশ্ন করা খুব জরুরি, নিজের চোখের সামনে আয়না রেখে তন্ন তন্ন করে খোঁজা প্রয়োজন যে, আমি যে আচরণটা জীবনসঙ্গীর সাথে করছি, সেই আচরণটা সে আমার সঙ্গে করলে আমি কি মেনে নিতাম?
বাংলায় একটা চমৎকার প্রবাদ আছে, ‘নিজের বেলা আঁটি শুঁটি পরের বেলা চিমটি কাটি।’ কাজেই আমি নিজে যেটা করতে পারছি না, সেটা কীভাবে অন্যের কাছ থেকে আশা করি?
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সিলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।