বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে সবার মধ্যে কম-বেশি উৎকণ্ঠা রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ফলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন এখন অনেকটাই আসক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে, মানুষের মস্তিস্কের যে অংশটি মাদকের জন্য উদ্দীপিত হয়, স্মার্টফোনের আসক্তিও একই জায়গাকে উদ্দীপিত করে। তাই সচেতন ব্যবহারকারীরা এখন স্ক্রিনটাইম (স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়) কমানোর চেষ্টা করছেন। এ প্রেক্ষাপটে আবারো সামনে এসেছে ‘ডাম্ব ফোনে’র ধারণা।
‘ডাম্ব ফোন’ প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে অপরিচিত হতে পারে, কিন্তু এ ধরনের ফোনের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তারা পরিচিত। ‘ডাম্ব ফোন’ মূলত খুব কম ফিচারসমৃদ্ধ ডিভাইস বা ফোন। ফোন বা মেসেজ দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে সামান্য ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ছাড়া এসব ডিভাইসে আর কোনো সফটওয়্যার ইনস্টলের সুযোগ নেই। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় স্ক্রিন টাইম অনেকাংশেই কমে আসে।
সম্প্রতি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের মধ্যে এ ধরনের ফোন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তরুণসহ সব বয়সী মানুষ ‘ডাম্ব ফোন’ ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন বলে গবেষণা প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে। বিভিন্ন জরিপ বলছে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে মানসিক ও স্বাস্থ্যগত ত্রুটি তৈরি হয়। এর মধ্যে হতাশা, উদ্বিগ্নতার মতো বিষয় রয়েছে।
কানাডার ১৬ বছর বয়সী লুক মার্টিন নিজের স্ক্রিনটাইম কমাতে স্মার্টফোন ছেড়ে ‘ডাম্ব ফোন’ ব্যবহার করছে। মার্টিন জানান, আগে যেখানে সে ৪-৫ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করত, সেখানে এখন দৈনিক মাত্র ২০ মিনিট ফোন ব্যবহার করে। ফলে ‘ডাম্ব ফোন’ যে প্রযুক্তি ব্যবহারকে সীমিত করবে, তা অনেকটাই প্রমাণিত।
অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানকে উপযুক্ত বয়সের আগেই ফোন ব্যবহার করতে দিতে চান না। কিন্তু বন্ধু-বান্ধবদের দেখাদেখি নাছোড়বান্দা হন সন্তানরা। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবক এখন ‘ডাম্ব ফোনে’র বিকল্প বেছে নিতে আগ্রহী হচ্ছেন।
অন্যদিকে প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কিংবা স্ক্রিন টাইম কমানো— এমন ক্ষেত্রে ‘ডাম্ব ফোন’ উপযোগী হলেও এর বাজার কতটা সম্প্রসারিত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কেননা, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কোনোভাবেই তাদের ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্টফোনের বিপরীতে ‘ডাম্ব ফোনে’র বাজারজাতে সায় দেবে না বলে মনে করছেন তারা।
বাজার বিশ্লেষক ও প্রযুক্তিবিদরা জানান, ‘ডাম্ব ফোনে’র ধারণা ছড়িয়ে পড়লেও সহসাই এটি বাজারে পরিবর্তন আনতে পারবে না। কেননা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়ার মাধ্যমে কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করছে। এদিক থেকে ‘ডাম্ব ফোন’ সে রকম মুনাফা তৈরি করতে পারবে না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে না পারাসহ বিভিন্ন ফিচার না থাকার কারণে তরুণরা সহজেই ‘ডাম্ব ফোন’ নির্ভর হবে না বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গিজচায়না অবলম্বনে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।