জুমবাংলা ডেস্ক : কমিশন ভিত্তিক ব্যবসায় সাধারণত লোকসান হয় না। পন্য বিক্রয় করতে পারলেই নির্দিষ্ট অংকের টাকা যোগ হয়ে যায় লাভের খাতায়। সুতরাং এ ধরণের ব্যবসায় বিক্রয় বাড়ানোই থাকে প্রধাণ উদ্দেশ্য। আর দেখে শুনে প্রতিষ্ঠিত কোন কোম্পানীর কমিশন এজেন্ট বা ডিলারশীপ নিতে পারলেই ব্যবসায়ে সফলতা পাওয়া সহজ হয়ে যায়।
আজ আপনাদের আমরা এলপিজি গ্যাসের ডিলারশীপ ব্যবসা সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। বাসা বাড়িতে এখন রান্নার কাজের প্রধান জ্বালানী এলপিজি গ্যাস। যা বিভিন্ন কোম্পানী বিদেশ থেকে আমদানী করে সিলিন্ডারে ভরে নির্দিষ্ট ডিলারের মাধ্যমে বাজারজাত করে। বর্তমানে বসুন্ধরা, ওমেরা, সেনা, লাফস, বেক্মিমকোসহ শতাধিক কোম্পানী আছে যারা এলপিজি গ্যাস বাজারজাত করছে।
এ ধরনের কোম্পানীগুলো বেশ বড় আকারেই তাদের ব্যবসা বিস্তার করেছে সারা বাংলাদেশে। বিভিন্ন কোম্পানী ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ড নামে তাদের পণ্যের ডিলারশীপ দেওয়ার জন্য জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকাগুলোতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবার বিভিন্ন সময় কোম্পানীর নিজস্ব ওয়েবসাইটেও ডিলারশীপ দেওয়ার বিজ্ঞাপ্তি দিয়ে থাকে।
এ জাতীয় ব্যবসায়ে আগ্রহী হলে আপনাকে তাদের দেওয়া যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে কথা বলে কিংবা সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে আপনি নিয়মনীতিগুলোর ব্যাপারে জেনে নিতে পারবেন। সেই সাথে সুযোগ-সুবিধাগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। কোম্পানী ভেদে নিয়মনীতি ও সুযোগ-সুবিধাগুলোয় ভিন্নতা থাকতে পারে।
সাধারণত এ জাতীয় ব্যবসায় স্থাপন করতে হলে নিজস্ব গোডাউন থাকতে হয়। ডিলারশীপের জন্য আবেদনের সময়ে গোডাউনের লে-আউট ও ছবি জমা দিতে হয়। গোডাউন নিজস্ব না হয়ে ভাড়া নেওয়া হলে ভাড়ার চুক্তিপত্রের ফটোকপিও জমা দিতে হয়। সাথে জমা দিতে হয় ব্যাংক সলভেন্সী। যা ব্যাংক আপনার অনুকূলে প্রদান করে।
যেকোন ব্যবসার জন্য ট্রেড-লাইসেন্স আবশ্যক। সুতরাং আপনাকে এলপিজি গ্যাসের ডিলারশীপ নিতে হলে অব্যশই ট্রেডলাইসেন্সের কপি জমা দিতে হবে। আর এলপিজি গ্যাস যেহেতু বিপদজনক দাহ্য পদার্থ সেক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত হিসেবে বিস্ফোরক লাইসেন্স সংগহ করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস থেকে আপনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন পূর্বক পেয়ে যাবেন বিস্ফোরক লাইসেন্স। এলপিজি গ্যাসের ডিলারশীপ কিংবা খুচরা বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রেই বিস্ফোরক লাইসেন্স আবশ্যক। এ লাইসেন্স ব্যাতীত এলপিজি গ্যাসের মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মূলধনের অংক নির্ভর করবে মূলত আপনার মার্কেটের আকার ও ব্যবসায়িক স্থানের উপর নির্ভর করে। শহর ও গ্রামের বাজার জনসংখ্যার ঘনত্ব ইত্যাদির উপর নির্ভর করে স্থায়ী ও চলতি মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যবসায় সফলতার বেশীরভাগ নির্ভর করে মার্কেটিংয়ের উপর।
মার্কেটিংয়ের জন্য অবশ্য কোম্পানী থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ ও পরিচালনা করে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে তাদের সাথে সু-সম্পর্ক রেখে ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে হবে। ডিলার হিসেবে কোম্পানীর পন্য খুচরা বিক্রেতার শপে পন্য ডেলিভারীর জন্য পরিবহন ও ডেলিভারী ম্যানের ব্যবস্থা আপনাকে করতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই খুব দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক নিয়োগ দিতে হবে। আগেই বলেছি এ ব্যবসায় লোকসানের সম্ভাবনা খুব কম। এক কথায় বলা যায় একটু দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে পারলে লোকসান হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। আর লাভের অংকটা সিলিন্ডার প্রতি কোম্পানীভেদে আলাদা আলাদা।
যত বিক্রয় তত লাভ। যেহেতু কমিশন ভিত্তিক ব্যবসায়। আর পন্যের একক প্রতি মূল্য যেহেতু একেবারে কম নয় সেহেতু লাভের পরিমানও সিলিন্ডার প্রতি অসন্তোষজনক নয়। প্রতিষ্ঠিত ও সুনামধারী এলপিজি গ্যাস কোম্পানীর ডিলারশীপ নিতে পারলে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা কঠিন কিছু নয়।
যেকোন ব্যবসায় শুরু করে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। আর তা যদি হয় এলপিজি গ্যাসের ডিলারশীপ ব্যবসা তাহলে তো কোন কথাই নেই। একটু বুঝে শুনে ব্যবসায় করুন। জেনে বুঝে তারপর যে কোন ব্যবসায় নামুন। ঝোকের মাথায় কোথাও বিনিয়োগ করতে যাবেন না। শুভকামনা আপনাদের সকলের জন্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।