জুমবাংলা ডেস্ক : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলে রিপন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তার মো. জামাল উদ্দিন (৪০) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মো. মোস্তফা সওদাগরের ছেলে।
শনিবার (১ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ।
এর আগে, শুক্রবার (৩১ মে) জেলার বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে উপজেলার চরমাকছুমুল গ্রামের মেঘনা নদী-সংলগ্ন এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. রিপন (৫২) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মৃত মো. হাবিব উল্ল্যার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৮ মে) নিজ বাড়ি থেকে রিপন ও তার ভগ্নিপতি জামাল পৃথক সময়ে মেঘনা নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান। এরপর ২৯ মে দুপুর ২টার দিকে নিহত রিপনের বোনের স্বামী জামাল বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফেরার পর তার স্ত্রী স্বামীর লুঙ্গিতে রক্ত লেগে থাকতে দেখে। এরপর জামাল ভোর বেলায় চট্টগ্রাম যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফিরে আসেননি।
নিহতের ছেলে আরমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত কিছুদিন আগে আমার ফুপা জামাল উদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরাসহ একটি মাছ ধরার ফিশিংবোট চুরি করে নিয়ে আসে। পরে বোটটি আমার বাবা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় মালিকের কেছে ফিরিয়ে দেন। গত উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে এলাকায় আমার ফুপা কয়েটি চুরির ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি আমার বাবা স্থানীয়দের জানালে তারা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর ফুপা দু’দিন জেল খেটে বেরিয়ে এসে আমার বাবাকে তার সহযোগী একই এলাকার দিদার, রবি, সোহাগ ও নিজামের সহযোগিতায় কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ মেঘনা নদীতে ফেলে দেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী এবং স্ত্রীর বড় ভাই ভিকটিম রিপনের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ২৮ মে রাত ১১টার দিকে একটি লোহার রড নিয়ে উপজেলার শিউলী একরাম বাজার থেকে দক্ষিণে বেলাল কোম্পানি মসজিদের পাশে অন্ধকারে আড়ালে ওঁৎ পেতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে জামাল তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে ভিকটিম রাস্তায় পড়ে যায়।
তখন বাজার থেকে কিছু পথচারী ঘটনাস্থলের রাস্তা দিয়ে আসতে দেখে ভিকটিমকে টেনে রাস্তার পাশে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে আসামি জামাল বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে এসে তার পরিহিত জামাকাপড় পরিবর্তন করে রাত দেড়টার দিকে পুনরায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে রিপনের মৃত্যু নিশ্চিত দেখে লাশটি কাঁধে নিয়ে মেঘনা নদীর কিনারায় ফেলে দেয়। পরে তার স্ত্রীকে বিশেষ প্রয়োজনে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আরমান হোসেন বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা মামলায় ধৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চরজব্বর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।