সুয়েব রানা, সিলেট : গোয়াইনঘাট উপজেলার ১২নং সদর ইউনিয়নের লুনী হাওর এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী লুনী হাওর জামে মসজিদের নবনির্মিত ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার, ৩০ মে, পবিত্র জুমার নামাজের পর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব ছোরাব আলী। তিনি এই এলাকার বাসিন্দা না হলেও বাংলাদেশ বেতারের সিলেট জেলা সংবাদদাতা ও বৃহত্তর পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহিমের পরিচিতজন হিসেবে এই মহৎ উদ্যোগে অর্থায়নের মাধ্যমে অংশ নেন। এ সময় এলাকাবাসী তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দোয়া করেন।
ভার্চুয়াল বক্তব্যে আলহাজ্ব ছোরাব আলী বলেন, “মসজিদ হলো শান্তি, সমাজ ও আলোর প্রতীক। প্রবাসে থেকেও দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে অংশ নিতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্যের। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহর ঘরের জন্য ব্যয় করা অর্থ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে মূল্যবান সঞ্চয় হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাবুল হোসেন, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ইমাম ও খতিব মাওলানা নাজিম উদ্দীন। তিনি উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান এবং মসজিদের উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি এম এ রহিম বলেন, “এই মসজিদ আমার পাশের এলাকার তবে এটি আমার হৃদয়ের কাছাকাছি। আমার প্রবাসী দাঁতা আলহাজ্ব ছোরাব আলীকে ধন্যবাদ জানাই, যিনি আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আল্লাহর ঘরের উন্নয়নে সহযোগিতা করেছেন। আমরা চাই, প্রত্যন্ত গ্রামের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেন শহরের মতো উন্নত সুযোগ-সুবিধা পায়।”
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাংবাদিক গোলজার আহমদ হেলাল বলেন, “মসজিদ শুধু নামাজের জায়গা নয়, এটি মানুষ গড়ার জায়গা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে যারা কাজ করছেন, তারা সমাজের প্রকৃত বিনিয়োগকারী। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অনুসরণযোগ্য।” তিনি সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকেও মসজিদ ও শিক্ষা খাতে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ গণমাধ্যমে উঠে আসা উচিত, যাতে আরও মানুষ অনুপ্রাণিত হন।
মো. সুজন উদ্দিন খান, যিনি মসজিদের দাতাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন, বলেন, “আমরা দায়িত্ববোধ থেকে এ মসজিদের উন্নয়নে পাশে আছি। আল্লাহর ঘরে সদকা করার সৌভাগ্য আল্লাহ যাকে দেন, সে সত্যিই ভাগ্যবান।” তিনি ভবিষ্যতে হিফজখানা ও পাঠাগার স্থাপনে ভূমিকা রাখার আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক
এম সাইফুর রহমান তালুকদার, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েছ, সদর পরগনা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মদিনাতুল কালিজুরি মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সেলিম উদ্দিন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজ উদ্দিন।
দোয়া শেষে শিরনীর আয়োজন করা হয়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী মাওলানা আবুল খায়ের ও ইউপি সদস্য তাজউদ্দিন।
বক্তারা তাদের আলোচনায় বলেন, ইসলাম ধর্মে মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও রক্ষণাবেক্ষণের ফজিলত অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন। মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করেন।” তারা সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
২৫ হাজার টাকায় ব্র্যান্ড নিউ ল্যাপটপ – ওয়ালটনের সাশ্রয়ী প্রযুক্তি
নবনির্মিত মসজিদটি আধুনিক নির্মাণশৈলীতে তৈরি হয়েছে, যাতে একসঙ্গে প্রায় ৫০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদ পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এখানে একটি হিফজখানা এবং ইসলামী পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা ও সহযোগিতা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তারা। স্থানীয়দের বিশ্বাস, প্রবাসী ও স্থানীয় দানশীলদের এমন উদ্যোগ এই অঞ্চলের ধর্মীয় ও সামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় যুবসমাজ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আরও কার্যকর অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।