বিনোদন ডেস্ক : ‘হিমুর বাবা সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি ২০২৩ সালের আগস্টে মারা যান। তার মা শামীম আরা চৌধুরী ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’ অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুকে লক্ষ্মীপুর শহরের লামচরী এলাকায় তার মা শামিম আরা চৌধুরীর কবরের পাশে সমাহিত করার ব্যবস্থা নিয়েছেন তার নানার বাড়ির স্বজনেরা।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খালা ও খালাতো ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে হিমুর মরদেহ লক্ষ্মীপুরে তার নানাবাড়িতে আনা হয়। হিমু তার প্রয়াত বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশে তার কবর প্রস্তুত করা হচ্ছিল। এর আগে বাদ জুমা রাজধানীর চ্যানেল আই চত্বরে হিমুর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
হুমায়ারা হিমুর মামা ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক মঈন উদ্দিন চৌধুরী কামরু বলেন, ‘হিমুর বাবা সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি ২০২৩ সালের আগস্টে মারা যান। তার মা শামীম আরা চৌধুরী ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’
বাবার বাড়ি চাঁদপুর হলেও হিমু জন্মের পর থেকেই লক্ষ্মীপুরে নানার বাড়িতেই বড় হয়েছেন বলে জানান তিনি। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদুজ্জামান চৌধুরী রাসেল বলেন, ‘জন্মের পর থেকে হিমুকে নিয়ে তার বাবা-মা এখানেই থাকতেন। একপর্যায়ে ২০০০ সালের দিকে তারা এখান থেকে ঢাকায় চলে যান। লক্ষ্মীপুরে এলে নানাবাড়িতেই থাকতেন তারা।’
এদিকে হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রাফিকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব হেডকোয়ার্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর আল আমিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হুমাইরা হিমু ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয় করেছেন হুমায়রা হিমু। ১৯৯৯ সালের পর থেকেই মঞ্চনাটকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিনয়জীবনের প্রথমদিকে বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছিলেন হিমু। তাকে এইডস নিয়ে সচেতনতামূলক একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায়। এরপর আরও কিছু বিজ্ঞাপনের কাজ — তারপর নাটকে অভিনয়ের সুযোগ আসে।
ছায়াবিবি ধারাবাহিক নাটকটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম প্রধান কাজ। ২০১১ সালে আমার বন্ধু রাশেদ চলচ্চিত্রের অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখেন হিমু। সিনেমাটিতে তরু আপা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
হিমুর আসল নাম হুমায়রা নুসরাত হিমু। কিন্তু বিনোদন দুনিয়ায় কাজ করতে এসে পর্দায় তিনি হন হুমায়রা হিমু। অভিনেতা টনি ডায়েসের অনুপ্রেরণাতেই নতুন নামের অবতারণা। এক সাক্ষাৎকারে হিমু একবার জানিয়েছিলেন, টনি ডায়েস তাকে বলেছিলেন, পৃথিবীর সব বিখ্যাত মানুষদের নাম দুই শব্দে হয়।
ছোটবেলা থেকেই নাটকে কাজ করার ইচ্ছে ছিল হিমুর। কিন্তু সেই সঙ্গে এয়ার হোস্টেজ হতেও চেয়েছিলেন। দুটো ইচ্ছের একটি জয়ে তিনি দিব্যি সফল হয়েছেন। তার অভিনীত নাটকের মধ্যে রয়েছে ডিবি, সোনাঘাট, চেয়ারম্যান বাড়ি, বাটিঘর, শোনে না সে শোনে না ইত্যাদি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।