“আমার সদ্য বিয়ে হয়েছে। আমার স্বামীকে বললাম, মা হবো? কোন দেশে মা হবো? আমি চাই না, আমার সন্তানকে পৃথিবীতে নিয়ে এসে এ রকম দেশে রেখে যেতে। এই দেশে যতক্ষণ দুর্নীতি আছে, আমি পারব না আমার সন্তানকে এই দেশে নিয়ে আসতে।”—গত বছর আরজি কর কাণ্ডের পর রাজপথে নেমে কথাগুলো বলেছিলেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী সোহিনী সরকার।

এরপর ‘ফড়িং’খ্যাত অভিনেত্রী সোহিনীকে নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। অনেকে তার বক্তব্যকে সমর্থন জানালেও একটি অংশ নোংরাভাবে আক্রমণ করেন এই অভিনেত্রীকে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের মুখপাত্র তথা নবাগত অভিনেতা কুণাল ঘোষও আক্রমণ করে মন্তব্য করেছিলেন। ফের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কুণাল। তবে এ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি সোহিনীকে। আড়াল ভেঙে বিষয়টির ব্যাখ্যা যেমন দিয়েছেন, তেমনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই অভিনেত্রী।
পূর্বের মতো এবারো আক্রমণ করেই বক্তব্য দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “যারা শাসকদলকে সারাক্ষণ কুকথা বলছেন, দেব তাদের মধ্যেই প্রতিভার খোঁজ পাচ্ছেন! সোহিনী আরজি কর কাণ্ডের সময় দুম করে বলে বসলেন, ‘এই রাজ্য নাকি সন্তান জন্ম দেওয়ার উপযুক্ত নয়। এরপরেও ওকে সমর্থন করতে হবে? দেব ওকেও সিনেমায় নিলেন।”
দেবের ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোহিনী। গত ২৫ সেপ্টেম্বর মুক্তি পায় এটি। এ সিনেমা মুক্তির আগে সোহিনীর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কুণাল লেখেছিলেন, “বাংলায় সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ভাবা যায় না! কিন্তু নতুন সিনেমার জন্ম দেওয়া যায়। আর তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতার আয়োজনে তার প্রমোশনে গিয়ে লম্ফঝম্ফও করা যায়। সিনেমা যখন জন্ম নিল, তাহলে বাকিটাতে নিশ্চয়ই আর সমস্যা থাকবে না। শুভেচ্ছা রঘু ডাকাত।”
সোহিনীর বক্তব্যকে কুণাল যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা ‘বিকৃত’ বলে মন্তব্য করেছেন এই অভিনেত্রী। তার ভাষায়, “আমি কি পাগল যে এ কথা বলব? সিপিএম, তৃণমূল বলে নয়, যে লঙ্কায় আসবে সেই রাবণ। শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশে নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কী? সে যদি কৃতী হয়, তাকে চাকরি বা পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের রাজনীতি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।”
শুধু পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলকে বিঁধে নয়, গোটা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন সোহিনী। তা স্মরণ করে সোহিনী বলেন, “বেমক্কা লিখে ছড়িয়ে দেওয়া হলো, আমি নাকি বলেছি, ‘এই রাজ্যে মা হবো না।”
ক্ষুব্ধ সোহিনী বলেন, “এমন যদি কোনো পরিস্থিতি হতো, আমার আর শোভনের (সোহিনীর স্বামী) কোনো শারীরিক সমস্যা আছে, তা হলে বিষয়টা আলাদা হতো। মাতৃত্ব একটা বোধ, যা আমার মধ্যেও প্রবাহিত। আমিও মা হতে চাই। আমার মা হওয়া নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যে ‘বিকৃত’ তথ্য ছড়িয়েছে তা অত্যন্ত বিরক্তিকর।”
গায়ক শোভনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন সোহিনী। মা হওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার যা বয়স তাতে আজ চাইলেই কাল মা হয়ে যাব, বিষয়টা এমন নয়। অবশ্যই মা হতে চাই। তবে দিনক্ষণ এখনো জানি না। পরিকল্পনা করে কিছু হয় না, হবেও না। সময়-সুযোগ বুঝে সন্তান দত্তকও নিতে পারি; দত্তক নেওয়ার জন্যও আমি প্রস্তুত।”
মডেল-অভিনেতা রণজয়ের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কের ইতি টানার পর গায়ক শোভন গাঙ্গুলির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সোহিনী সরকার। গুঞ্জন রটেছিল, বিদেশে ছুটি কাটাতে গিয়ে বাগদান সেরেছেন এই যুগল। যদিও এই গুঞ্জন ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেন সোহিনী।
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গায়ক শোভন গাঙ্গুলির সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন সোহিনী। গত বছরের ১৫ জুলাই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তারা। আপাতত সংসার আর কাজ নিয়েই অধিক ব্যস্ত সময় পার করছেন সোহিনী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



