আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় জ্বালানি পুনরায় ভরার প্রয়োজন ছাড়াই দীর্ঘ পথ অতিক্রমে সক্ষম করে তুলতে ইসরাইলের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানে গোপনে পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। মিডল ইস্ট আইয়ের অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, গত শুক্রবার ইরানে হামলায় অংশ নেওয়া ইসরাইলের যুদ্ধবিমান আকাশপথে জ্বালানি নেয়নি কিংবা পুনরায় জ্বালানি ভর্তি করতে অবতরণ করেনি আশপাশের কোনো দেশেও।
তারা জানান, এ বিশেষ অভিযানের জন্য ইসরাইলি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের কাঠামো এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে বাড়তি জ্বালানি বহন করা যায়। এটি আবার বিমানটির ‘স্টেলথ’ বা রাডারে ধরা না পড়ার ক্ষমতাকে কোনোভাবে প্রভাবিত করেনি। এফ–৩৫ যুদ্ধবিমানের এ সংস্করণ ‘এফ–৩৫ আই আদির’ নামে পরিচিত।
এফ–৩৫ হল বিশ্বের একমাত্র দূরপাল্লার স্টেলথ ফাইটার এবং এর বৈশিষ্ট্যের জন্য রাডার বা ইনফ্রারেড সেন্সরগুলোর জন্য এটি ট্র্যাক করা কঠিন করে তোলে। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবারের ইসরাইলের আক্রমণের মাত্রা এবং এর আশ্চর্যজনক প্রকৃতির কারণে এই উন্নতি এফ–৩৫-এর জন্য এক বিরাট পরিবর্তন।
মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশ এ যুদ্ধবিমান কেনার চিন্তা করছে, তারা এ অভিযানের পর এফ-৩৫-এর দক্ষতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। একইভাবে নজর রাখবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও রাশিয়াও।
একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি গেম চেঞ্জার। এই পরিবর্তনে ইসরাইলের প্রতি আমাদের সহযোগিতা ছিল।
তারা জানান, ইসরাইলি এফ-৩৫ আই যুদ্ধবিমানগুলোয় এ পরিবর্তন আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়।
তবে কীভাবে আরও জ্বালানি বহনের জন্য এফ-৩৫ এ পরিবর্তন আনা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন ওই কর্মকর্তা। তবে দ্বিতীয়জন বলেন, বাহ্যিকভাবে ড্রপ ট্যাংক সংযুক্ত করা হয়েছে যুদ্ধবিমানটিতে।
অ্যারোডাইনামিক অ্যাডভাইজরির একজন মহাকাশ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড আবুলাফিয়া মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, ইসরাইলের কাছে একমাত্র বিকল্প ছিল ড্রপ ট্যাংক ব্যবহার করা। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এফ-৩৫এস ইন্টারফেস সিস্টেম তৈরি করা যাতে ড্রপ ট্যাংকের গোপনীয়তা নষ্ট না হয়। শুধু ফিক্সচার ডিজাইন করাই যথেষ্ট নয়, বরং কিছু ইন-লাইন পরিবর্তনও করতে হবে। আমার ধারণা, ইসরাইল এটি আমাদের সহায়তায়ই করেছে।
এফ-৩৫-এর প্রকাশ্যে ঘোষিত যুদ্ধ পরিসীমা প্রায় ৭০০ মাইল। ইসরাইল এবং ইরানের মধ্যে সবচেয়ে কম দূরত্ব হলো প্রায় ৬২০ মাইল।
যদি মধ্য-আকাশে জ্বালানি ভরার ব্যবস্থা না করা হতো, তাহলে তাত্ত্বিকভাবে তারা উপসাগরীয় অঞ্চলে বা আজারবাইজানে একটি মার্কিন ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, এ অঞ্চলের কোনো মার্কিন ঘাঁটিতে স্থল জ্বালানি ভরার কাজ করা হয়নি।
তবে আজারবাইজান বলেছে, তারা ইরান বা অন্য কোনো দেশের ওপর আক্রমণ চালানোর জন্য তার আকাশসীমা বা ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।