আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র কেনাকাটায় বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে ইউক্রেনে। দেশটির একটি অস্ত্র সংস্থা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করেছেন প্রায় চার কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ ৪৩৯ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা (এসবিইউ)। বিবিসি, এএফপি।
অস্ত্র কেনাকাটায় এই দুর্নীতির অভিযোগে মোট পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ইউক্রেনের সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ১২ বছর পর্যন্ত জেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের আগস্টে কর্মকর্তারা অস্ত্র সংস্থা লভিভ আর্সেনালের সঙ্গে এক লাখ আর্টিলারি শেলের জন্য ১.৫ বিলিয়ন রিভনিয়াস (৩৯.৬ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ডলার) মূল্যের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। অর্থ প্রদানের পর এই তহবিল বিদেশে নিবন্ধিত একটি ব্যবসায় স্থানান্তর করার কথা ছিল, যা পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনে গোলাবারুদ সরবরাহ করবে। কিন্তু এই অস্ত্র ইউক্রেনে সরবরাহ করা হয়নি। বরং অর্থগুলো ইউক্রেন এবং পূর্ব ইউরোপের বলকানের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল বলেছেন, তহবিলগুলো জব্দ করা হয়েছে এবং দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতি। আর তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোতে সদস্যপদ ত্বরান্বিত করতে দেশে দুর্নীতি দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে কিয়েভ। কারণ যোগদানের আগে দেশে ব্যাপক দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন উভয় ব্লকের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে তার প্রধান অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেছিলেন। এমনকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েই বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। অথচ যুদ্ধ চলাকালীনও দেশে দুর্নীতি দমন করতে পারছে না কিয়েভ প্রশাসন। ইউক্রেনে দুর্নীতি দমনের সর্বশেষ প্রচেষ্টার প্রমাণ হিসেবে ২০২২ সালের জুলাই মাসে দেশটির সাবেক রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পরিষেবার প্রধান ইভান বাকানভকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই ইউক্রেনে অর্থ ও সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছেন। তার মতে, ইউরোপের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ইউক্রেন। প্রচার ও গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ২০২২ সালের দুর্নীতি উপলব্ধি সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেন ১১৬তম স্থানে ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।