আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্যস্থল। বাংলাদেশের জনশক্তি মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় আরও জনশক্তি যেতে পারে, সে ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আর এ খবরেই অনেকটা তোরজোর শুরু করতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি (বিআরএ) গুলোর। দেশের মোট রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ১১০০ টির নেই কোন অনুমোদন। অবৈধ ভিসা ব্যবসায় জড়িত বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়ায় জনশক্তির বাজার ধ্বংস করছে।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্ক না করে অধিক অর্থে ভিসা যোগাড় করায় মালয়েশিয়ায় অভিবাসনের খরচ দ্রুতগতিতে বাড়ছে, সেখানে চাকরি পেতে আগ্রহী প্রতিটি শ্রমিককে অভিবাসন, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ, স্বয়ংক্রিয় বরাদ্দ পরিষেবা, কাজের আদেশের সত্যায়নের জন্য ফি হিসাবে ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে। চাকুরীতে নিয়োগের অনুমতিপত্র, ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স ও বিমান ভাড়ার জন্য কয়েক লাখ টাকা দিতে হচ্ছে।
এ ছাড়া ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সাথে জড়িত অননুমোদিত এজেন্সিগুলি ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয় এজেন্সি গুলো ।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের উপার্জনের বেশিরভাগ অর্থই বিভিন্ন দেশে পাচার করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে মালয়েশিয়ার সরকারের অনুমোদিত এজেন্সির সংখ্যা ১০১টি। তবে বায়রার সদস্যরা দাবি করেছেন যে সেইসব অনুমোদনহীন সংস্থার প্রতিনিধি বা মালিকরা ১০১টি বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি (বিআরএ) কে দায়ী করছে, যেগুলি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত আন্ডারস্টেটিং স্মারকের (এমওইউ)-এর পরিশিষ্ট বি-এর অধীনে মালয়েশিয়া সরকার অনুমোদিত। অতিরিক্ত চার্জ আদায় এবং দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে অভিবাসন প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা হয়,সামঝোতা স্মারকের ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে, মালয়েশিয়া সরকার (বিআরএ) নির্বাচন এবং কোটা বিতরণের জন্য অনলাইন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করবে।
মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সভার রেজুলেশনের বলা হয়,বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ,এই দুই দেশের মধ্যে কর্মীদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতেই হবে।সমঝোতা স্মারকে উল্লিখিত বিধান এবং জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সভার রেজুলেশন অনুসরণ করে, মালয়েশিয়া সরকার ১০১টি বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সি নির্বাচন করেছে।
এই সংস্থাগুলি মালয়েশিয়ার নিয়োগ কর্তাদের ভিসা বরাদ্দ পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে চাহিদাপত্র এবং ভিসা পাচ্ছে। চাহিদা পত্র এবং ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের কাউকে টাকা দিতে হবে না।তবে ৬৯৪টি এজেন্সির একটি গ্রুপ এবং প্রায় ৪০০টি অবৈধ এজেন্সি ভিসা কেনাবেচার অবৈধ ব্যবসা করে আসছে।তারা কিছু নিয়োগ কর্তার কাছ থেকে চাহিদাপত্র এবং ভিসা ক্রয় করে যাদের বিদেশী কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা নেই।
এজেন্সি গুলো প্রতিটি চাহিদা পত্রের জন্য ও ভিসার জন্য ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নানা অজুহাতে ওই কর্মীকে গুনতে হয় লাখ টাকা।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি(বায়রা) একাধিক সদস্যরা জানিয়েছেন , অনুমোদনহীন এজেন্সিগুলোর চাহিদাপত্র ও ভিসা নিয়ে যাতায়াত করে, বেশিরভাগ বাংলাদেশি অভিবাসী রিক্রুটিং এজেন্সিকে অতিরিক্ত মাইগ্রেশন ফি দেওয়ার পরেও তাদের কর্মক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন। এ ধরনের ঘটনা বিদেশি নিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
অনুমতিহীন এজেন্সি গুলোর অবৈধ ভিসা লেনদেন বন্ধ করার না গেলে আগামীতে মালয়েশিয়ায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের ব্যয় কয়েক গুন বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এ বিষয়ে বৈদেশিক ও শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বৃদ্ধিকর করার দাবি জানিয়েছেন বৈধ জনশক্তি অভিবাসন এজেন্সির মালিকরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।