আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ন্যাশনাল পার্কে ওয়াশিংটন মনুমেন্ট এবং লিংকন মেমোরিয়ালের মতো ঐতিহাসিক অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল হিল ভবন থেকে রাস্তার ওপাশেই পার্কের মধ্যে নতুন একটি ভাস্কর্য চোখে পড়ে দর্শনার্থীদের। এই ভাস্কর্য দেখে অনেকেরই আবার চক্ষু চড়কগাছ। কারণ ঐতিহাসিক নানা নিদর্শনের ওই স্থানটিতে স্থাপন করা হয়েছে মানুষের মলের একটি মূর্তি। আর সেই মল স্থাপন করা হয়েছে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির একটি বিখ্যাত ডেস্কের ওপর।
বিষয়টি দেখে অনেকেই বিনোদন অনুভব করেছেন। তবে যাদের উদ্দেশ্য করে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে তাঁদের জন্য বিষয়টি অপমানজনক। শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়ের পর ক্যাপিটাল হিলে দাঙ্গা সৃষ্টি করা লোকদের ব্যঙ্গ করেই ওই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ক্যাপিটালের ভেতরে সেদিন ন্যান্সি পেলোসির ব্যবহৃত ওই টেবিলটির ওপর পা তুলে বসেছিলেন এক দাঙ্গাকারী।
ভাস্কর্যটির নিচে একটি ফলকের মধ্যে লেখা রয়েছে, ‘এই স্মারকটি সেই সাহসী পুরুষ এবং নারীদের সম্মানে যারা একটি নির্বাচনকে উল্টে দেওয়ার জন্য ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি লুটপাট, প্রস্রাব এবং মলত্যাগ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটালে প্রবেশ করেছিলেন।’
ভাস্কর্যটির নিচে আরও লেখা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৬ জানুয়ারির সেই বীরদের অবিশ্বাস্য দেশপ্রেমিক এবং যোদ্ধা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই স্মৃতিস্তম্ভটি তাদের সাহসী আত্মত্যাগ এবং দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকারের প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।’
নতুন এই ব্যঙ্গাত্মক ভাস্কর্যের শিল্পী কে বা কারা এটি তৈরি করেছে, সেই সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, সিভিক ক্রাফটেড এলএলসির কাছ থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ভাস্কর্যটি স্থাপন করার অনুরোধ অনুমোদন করেছে ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস।
দ্য রেজলুট ডেস্ক নামের এই ভাস্কর্যটি নিয়ে মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপুল চর্চা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ এটিকে ‘রুচিহীন’ এবং ‘সম্পূর্ণ বিব্রতকর’ বলেছেন। আবার কেউ কেউ এটিকে ‘দুর্দান্ত’ বলেও উল্লেখ করেছেন। এক্সে একজন লিখেছেন, ‘আমেরিকায় স্বাগতম, যেখানে আমাদের গণতন্ত্র ভাঙার চেষ্টা করা লোকদের সম্মান করে একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি বর্তমানে ন্যাশনাল মলে দাঁড়িয়ে আছে।’
বৃহস্পতিবার মূর্তিটির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া অনেক লোকের মধ্যে একজন ছিলেন জেফ জিম্যান। দাঙ্গার দিনটির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এটি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এটি থামানোর কোনো চেষ্টাই করেননি। বরং তিনি ওই লোকদের উৎসাহিত করছিলেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।