আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্যারেজ থেকে লাগাতার পানি ছাড়ার প্রতিবাদে এবার রাজ্য সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই ঘোষণা দেন তিনি। এতে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার মুখে জাতীয় সড়কের ওপর আটকে পড়েছে হাজার হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক।
গত চার দিন ধরে ঝাড়খণ্ডের মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে লাগাতার পানি ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে মমতা বলেন, ‘তিনদিন বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করে দেয়ার জন্য ডিজিকে বলছি।’ এরপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খন্ড রাজ্য সীমান্তে জাতীয় সড়কের ওপর আটকে দেয়া হয় পণ্য বোঝাই সব ট্রাক। পাশাপাশি জাতীয় সড়কে দেয়া হয় লোহার গার্ডরেল। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা সব ধরনের বড় গাড়ি বাংলায় ঢুকতে না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে ছোট ব্যক্তিগত গাড়িগুলো আটকানো হচ্ছে না।
এদিকে বন্যা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘ডিভিসি পরিচালিত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে অপরিকল্পিত ভাবে পাঁচ লাখ কিউসেকের বেশি পান ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম এবং বাঁকুড়ার মানুষ বিপর্যস্ত। এত পানি ডিভিসি আগে কখনও ছাড়েনি। নিম্ন দামোদর এবং সংলগ্ন এলাকা বন্যায় ভেসে গেছে। ২০০৯ সালের পর এমন বন্যা আর কখনও হয়নি।’’
সীমান্ত বন্ধের পর তৈরি হয় যানজট। সেখানে আটকে পড়ে জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ট্রাক। এ সময় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ভারতের সেভেন সিস্টার্সমুখী পণ্য বোঝাই ট্রাকও আটকে পড়ে। ট্রাক চালকরা বলছেন, আটকে পড়া গাড়ির মধ্যে জরুরি ওষুধ, খাদ্যপূর্ণ থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো রয়েছে। এ ছাড়া পচনশীল আপেল, ন্যাসপাতি, পিঁয়াজ, মাছের মতো একাধিক পণ্যও রয়েছে। যা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার পাল্টা প্রতিবাদ হিসেবে ঝাড়খণ্ডের কমিউনিস্ট পার্টি এমসিসি সেরাজ্যের বর্ডারেও অবরোধ ডেকেছে, ফলে এদিন সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে যাওয়ার পথে ঝাড়খন্ড সীমান্তে আটকে দেয়া হয়ছে পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে যাত্রীবাহী বাস, এমনকি ছোট গাড়িও। ফলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানার দুই প্রান্ত।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন পদক্ষেপের প্রতিবাদে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিজেপি নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে অবরোধ উঠানোর হুঙ্কার দিয়ে শুভেন্দু বলেন ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন। তাই ঝাড়খণ্ড বর্ডারে হাজার হাজার গাড়ি আটকে রেখেছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।