সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করায় ওই শিক্ষার্থীর নানাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আল আমিন নামের এক যুবক।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার আলী আজগর (৬০) রায়দক্ষিণ এলাকার মৃত. আব্দুর রশিদ খানের ছেলে। অপরদিকে, অভিযুক্ত আল আমিন (৩৮) একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
মৃত আলী আজগরের ভাতিজা আবুল কালাম ও স্থানীয়রা জানান, আল আমিন নামের ওই বখাটে দীর্ঘদিন ধরে আলী আজগরের মেয়ের ঘরের নাতনীর সঙ্গে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী করতো। গত সোমবার সে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আল আমিন ফের তাকে উত্যক্ত ও ধর্ষণচেষ্টা করে। এ সময় ওই শিক্ষার্থী দৌঁড়ে ঘটনাস্থল থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করে এবং স্থানীয় এক অটো চালকের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরতে সক্ষম হয়। এরপর পরিবারের কাছে ঘটনার কথা জানালে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা।
আবুল কালাম বলেন, শুনেছি থানায় অভিযোগ গ্রহণ করেলও প্রথমে মামলা নিতে না করেছে সার্কেল স্যার। এরপর পুলিশ তদন্ত করতে এসেছিল। কিন্ত এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে আলী আজগরকে কুপিয়ে ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে আল আমিন। এ সময় আল আমিনের সাথে আরো বেশ কয়েকজন সহযোগী ছিল। খবর পেয়ে আলী আজগরের দুই ছেলে লিয়াকত ও সায়েম এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মারধর করে আল আমিন ও তার সহযোগীরা।
তিনি আরো বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় আলী আজগরকে উদ্ধার করে প্রথমে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে রেফার্ড করার পর এনাম মেডিকেলে নেয়া হলে তিনি মারা যান। সাভার থানার পুলিশ আলী আজগরের লাশ পোস্ট মর্টেমের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাবে।
প্রথমে মামলা নিতে না চাওয়ার কারণ ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা সিংগাইর থানার এসআই ফজলুল বলেন, এ বিষয়ে ওসি স্যার ও সার্কেল স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। আমি কিছু বলতে পারবো না।
মামলা নিতে না চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সহকারি পুলিশ সুপার (সিংগাইর সার্কেল) ফাহিম আসজাদ বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা সোমবার অভিযোগ দেয়ার পর মঙ্গলবার মামলা রুজু হয়েছে।
এদিকে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জে.ও.এম. তৌফিক আজম প্রথমে দাবি করেন, শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকেই প্রথমে মামলা রুজু করতে চায়নি। এটা ধর্ষণ চেষ্টা না, উত্যক্ত ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গীর ঘটনা। শিশুটির মা উত্যক্ত করার কথা উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পরবর্তী মঙ্গলবার দুপুর ১২.৪৫ মিনিটে মামলা রুজু হয়েছে। মামলা নং- ৩৯।
মামলা রুজুর পর আসামীর অস্ত্রের কোপে ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ হওয়ার পরই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্ত পুলিশে আসামীকে পায়নি। আমরা আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।