আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিনে পাঁচশোরও বেশি মহিলার প্রোফাইল ঘাঁটতেন যুবক। ডেটিং অ্যাপের প্রতি আসক্তি কমাতে মনোবিদের কাছে ছুটতে হল লন্ডনের বাসিন্দা এড টার্নারকে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতোই ইদানীং ডেটিং অ্যাপগুলিও মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
অপরিচিতদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা, তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথাবার্তা, কখনও কখনও দেখাসাক্ষাৎ, পছন্দের ব্যক্তির সঙ্গে সমীকরণ তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয় ডেটিং অ্যাপ। সম্প্রতি বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ডেটিং অ্যাপগুলির বহুল ব্যবহার মানুষকে সেগুলির প্রতি আসক্ত করে তুলছে। সম্প্রতি এক লন্ডনের বাসিন্দা এড টার্নার দাবি করেছেন যে, ডেটিং অ্যাপের প্রতির আসক্তির কারণে তাঁকে থেরাপির সাহায্য নিতে হয়েছে। যুবক জানান, তিনি এক দিনে প্রায় ৫০০ মহিলার প্রোফাইল ঘাঁটতেন।
মনের মানুষ খুঁজে পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বাঁ দিক ও ডান দিকে মুঠোফোনের পর্দা সোয়াইপ করে যাচ্ছেন তাঁরা। ডেটিং অ্যাপে কারও প্রোফাইল দেখে ডান দিকে দিকে সোয়াইপ করার অর্থ হল, আপনার তাঁকে মনে ধরেছে এবং আপনি তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে আগ্রহী। আর কারও প্রোফাইল দেখে বাঁ দিকে দিকে সোয়াইপ করার অর্থ হল, আপনার তাঁকে মনে ধরেনি।
মনের মানুষ খোঁজার উদ্দেশ্যে এড কিন্তু ডেটিং অ্যাপে প্রোফাইল তৈরি করেননি। তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল, ক’জন তাঁকে পছন্দ করছেন, তার উপর নজর রাখা। ডেটিং অ্যাপে কত জন তাঁকে পছন্দ করছেন, সেই খবর রাখতে বারে বারেই ডেটিং অ্যাপ খুলে দেখার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল এডের। তরুণীরা তাঁর প্রোফাইল পছন্দ করলে তাঁর মনে উত্তেজনা তৈরি হত। একই রকম ভাবে কোনও তরুণী তাঁর প্রোফাইল পছন্দ না করলে কিংবা তাঁর মেসেজের উত্তর না দিলে তিনি মনমরা হয়ে পড়তেন।
এড বলেন, ‘‘মানসিক ভাবে নিজেকে চাঙ্গা রাখতে আমি টিন্ডার নামে ডেটিং অ্যাপের উপরেই ভরসা করতাম। আমি সব মেয়ের প্রোফাইলে গিয়েই ডান দিকে সোয়াইপ করতাম। টিন্ডার অ্যাপটি খুললেই যেন আমার আর হুঁশ থাকত না। টিন্ডারে মেয়েরা আমার প্রোফাইলে কী ভাবে সাড়া দিচ্ছে, তার উপরেই আমার মেজাজ নির্ভর করত। টিন্ডারে আমার এক তরুণীকে মনে ধরে।
তাঁর সঙ্গে আমি সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়ি। সম্পর্কে থাকার সময়েও আমি টিন্ডার ব্যবহার করতাম। তখনও টিন্ডারের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারতাম না। আমার মনে হয়, আমি খুবই খারাপ সঙ্গী, ওর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছি। টিন্ডারের জন্যই আমার সম্পর্ক আর টিকল না।’’
সম্পর্ক ভাঙার পর এড মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। মনোবিদের কাছে যেতে হয় তাঁকে। মনোবিদ তাঁকে জানান যে, তিনি অবসাদ ও বর্ডারলাইন পারসোন্যালিটি ডিজ়অর্ডারে ভুগছেন। মনোবিদের কড়া নির্দেশে তিনি এখন ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করা বন্ধ করেছেন। চিকিৎসা চলছে এডের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।