জুমবাংলা ডেস্ক : সারাজীবন ৪০ কেজিতে একমণ শুনে আসলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আমবাজারে ৫০ থেকে ৫২ কেজিতে এক মণ ধরে আম কিনছেন আড়তদাররা। এতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
সরেজমিনে দিনব্যাপী কানসাট আমবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। আম চাষিদের অনেকটা জিম্মি করেই ৫০ থেকে ৫২ কেজিতে একমণ ধরে আম কিনছেন আড়তদাররা। এছাড়া বাড়তি ওজনে আম বিক্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করলে চাষিদের সঙ্গে বাজে আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে।
কানসাটে আম বিক্রি করতে আসা শ্যামপুর ইউনিয়নের আরিফ বলেন, এ বছর অন্য বছরের থেকে গাছে আম অনেক কম ধরেছে। আর এদিকে আম বিক্রি করতে এসে শুনছি ৫২ কেজিতে একমণ ধরা হবে। এতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরও আমাদের জিম্মি করে ৫০ কেজিতে মণ নিয়েছেন আড়তদাররা। আর এবার ফের ৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন। এমন চলতে থাকলে আমরা কীভাবে আমের চাষ করবো?
কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, আম হচ্ছে কাঁচা পণ্য। গেল পাঁচবছর থেকে আমরা ৪৫ কেজিতে এক মণ ধরে আম বিক্রি করতাম। তবে গতবছর হঠাৎ আড়তদাররা ৫০ কেজিতে মণ নেওয়া শুরু করে। এবার ফের বলছে ৫২ কেজিতে মণ বিক্রি করতে হবে। এতে আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি।
তিনি বলেন, আমবাজারে এক কথা বলে আম কেনেন আড়তদাররা। আর ঘরে গিয়ে ওজনের সময় খারাপ আচরণ করেন। আমরা কিছু বলতে পারি না।
কানসাটে আম বিক্রি করতে আসা জিয়াউর রহমান নামে এক কলেজশিক্ষক বলেন, গত ১০ দিন থেকে এই কানসাট বাজারে আম বিক্রি করতে আসছি। এমন কোনো দিন নেই যে আড়তদারদের সঙ্গে ঝামেলা হয় না। কেউ বলে ৫০ কেজিতে মণ নেবে, ফের কেউ বলে ৫২ কেজিতে মণ নেবো। তবে এবার আমের দাম ভালো আছে।
এই ৫২ কেজিতে মণ ধরার বিষয়টি নিয়ে অর্ধশতাধিক আম চাষি অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, কানসাট বাজারে ওজন নিয়ে একটি ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করা হবে।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, কানসাট বাজারে আম চাষিদের জিম্মি করে ৫০ কেজিতে মণ নিচ্ছে আড়তদাররা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাজারও চাষি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আর জেলার সব আম বাজারে এক ওজনে মণ করা প্রয়োজন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হায়াত বলেন, কানসাট আমবাজারে ওজন নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি শুনেছি। পরে জেলার অন্য আমবাজারের সঙ্গে ওজন মিলিয়ে এ বাজার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আমের মণ ৫২ কেজিতে নিচ্ছে আপনার কাছেই শুনলাম। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।