মেলা-খেলায় ব্যস্ত মানিকগঞ্জের ডিসি, অনিয়মের প্রশ্নে নীরব!

সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। খেলাধুলা, মেলা, র‌্যালি ও বিভিন্ন দিবস উদযাপনে তাঁর সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে জেলার নানা অনিয়ম ও জনদুর্ভোগ নিয়ে কার্যকর কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ সচেতন নাগরিকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি মানিকগঞ্জে ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি, ভলিবল ও ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন জেলা প্রশাসক নিজে। এছাড়া কারাতে, স্কেটিং, পিঠা উৎসব, সাধুমেলা, গুড় মেলাসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে তাঁকে নিয়মিত দেখা গেছে।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের র‌্যালি, দিবস পালনেও তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। তথ্য অধিকার দিবস, ডিম দিবস, প্রবীণ দিবস ও বিশ্ব শিক্ষক দিবসের মতো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি।

তবে এসব আয়োজনে ব্যস্ততা জেলার প্রশাসনিক কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম ও জনদুর্ভোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসনের তেমন নজর নেই।

বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “সভায় জেলা প্রশাসক শুধু নিজের বক্তব্য দেন। অন্যদের কথা গুরুত্ব দেন না। এতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত আটকে থাকে।”

গণমাধ্যম ও এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলন, কৃষিজমিতে মাটি কাটা, সরকারি খাল দখল, ভেজাল খাদ্য, ভুয়া ডাক্তার, বেওয়ারিশ কুকুর ও ইটভাটার অনিয়ম রয়েছে। সাটুরিয়ায় একটি সড়কের দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলনের পরও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণেও তদারকি নেই বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। এছাড়া জেলায় অনিয়ন্ত্রিয় ভিক্ষাবৃত্তি ও বাল্যবিয়ে, মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে দাবি সচেতন নাগরিকদের।

এ বিষয়ে একজন সচেতন নাগরিক বলেন, “উৎসব আয়োজন ভালো, কিন্তু তদারকি ও দুর্নীতি রোধ জরুরি। সংস্কৃতিমনা জেলা প্রশাসকের উন্নয়নমুখী উদ্যোগ খুবই সীমিত। এতে জেলাটি পিছিয়ে পড়ছে।”

এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লার মুঠোফোনে কল করা হলে মিটিংয়ে আছি বলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।