ধর্ম ডেস্ক : যেসব জিনিস মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু, তার মধ্যে একটি হলো বদনজর। বদনজর সত্যিই মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের বদনজরের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। কেননা বদনজর সত্য বা বাস্তব ব্যাপার।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৫০৮)
বদনজর এতটাই মারাত্মক ক্ষতিকারক যে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কোনো জিনিস যদি ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদনজরই তা অতিক্রম করতে পারত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০৫৯)
এ জন্য আমাদের উচিত বদনজর থেকে নিরাপদে থাকতে সর্বদা মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। নিজের ও সন্তানদের ওপর যাতে কারো বদনজর না পড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং অন্য কারো সম্পদে যাতে নিজের বদনজর না পড়ে, সেদিকেও সতর্ক থাকা।
কারো কোনো অর্জন দেখলে তাতে হিংসা না করে তার জন্য বরকতের দোয়া করা। কারণ নবীজি (সা.) অন্যের অর্জন, সৌন্দর্য ও সম্পদে বদনজর দেওয়াকে তাকে হত্যা করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কেউ এ রকম করলে তিনি খুব রাগান্বিত হতেন।
আবু উমামা ইবনে সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, আমির ইবনে রবিআ সাহল ইবনে হানিফকে গোসল করতে দেখে বলেন, ‘আজ আমি যে-ই সুন্দর মানুষ দেখলাম, এ রকম কাউকেও দেখিনি, এমনকি সুন্দরী যুবতীও এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট নয়।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সাহল সেখানে লুটিয়ে পড়লেন।
এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর খিদমতে হাজির হয়ে আরজ করল, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি সাহল ইবনে হুনাইফের কিছু খবর রাখেন কি? আল্লাহর কসম! সে মাথা তুলতে পারছে না।’ তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি কি মনে করছ যে তাকে কেউ বদনজর দিয়েছে?’ লোকটি বলল, ‘হ্যাঁ, আমির ইবনে রবিআ (বদনজর দিয়েছে)।’
ঢাকার ধামরাইয়ে প্রকাশ্য স্ত্রীর সামনে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
রাসুল (সা.) আমিরকে ডেকে ক্রোধান্বিত হয়ে বললেন, “তোমাদের কেউ নিজের মুসলমান ভাইকে কেন হত্যা করছে? তুমি ‘বারাকাল্লাহ’ কেন বললে না?” এরপর আমির তার হাত, মুখ, হাতের কনুই, হাঁটু, পায়ের আশপাশের স্থান এবং লুঙ্গির নিচের আবৃত দেহাংশ ধুয়ে সেই পানি একটি পাত্রে জমা করলেন। সেই পানি সাহলের দেহে ঢেলে দেওয়া হলো।
অতঃপর সাহল সুস্থ হয়ে সবাইকে নিয়ে রওনা হলেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস : ১৬৮৯)
উপসংহার
আমাদের উচিত মানুষের বদনজর থেকে নিজেদের সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পত্তি ইত্যাদি রক্ষা করতে সর্বদা সতর্ক থাকা। সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং এমন কোনো কাজ না করা, যা অন্যের কুদৃষ্টির সুযোগ তৈরি করতে পারে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বোঝাপড়া ও তাওফিক দান করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।