আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটেনের ডুডলি লাইব্রেরি থেকে ১৯৬৪ সালে একটি বই ধার নিয়েছিলেন ডেভিড হিকম্যান। শেষ বয়সে এসে হঠাৎ বইটি ফেরত দিতে গিয়ে দেখেন তার জরিমানা ৪২ হাজার ৩৪০ পাউন্ড। শনিবারের (২১ জানুয়ারি) বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫৫ লাখ ৪১ হাজার ২০২ টাকা!
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, ৭৬ বছর বয়সী ডেভিড হিকম্যান দীর্ঘ ৫৮ বছর পর সম্প্রতি বইটি লাইব্রেরিতে জমা দিতে যান।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, হিকম্যান ১৯৬৪ সালে ‘দ্য ল ফর মোটরিস্ট’ শীর্ষক বইটি ধার নিয়েছিলেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার পর নিজেকে কিছুটা উজ্জীবিত করার আশায় বইটি পড়তে নিয়েছিলেন। শহরের মেয়র ডব্লিউজিকে গ্রিফিথের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় ডুডলি হাইস্কুলের মেয়েরা ওই সময় রাস্তা দিয়ে দল বেঁধে হেঁটে যাচ্ছিল। তাদের দিকে হাত নাড়িয়ে হিরোইজম দেখাতে গিয়েই মেয়রের গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে বসেন তিনি!
ওই ঘটনার পর হিকম্যান আইনি বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে আর বইটি লাইব্রেরিতে ফেরত দেওয়ার কথা ভাবেননি। অনেকটা আলসেমি করেই সেটি হয়ে ওঠেনি। বইটি ড্রয়ারেই পড়ে ছিল।
হিকম্যান পরে লন্ডনে থিতু হন। সেখানে আসার পরও বইটি ফেরত দিতে অবহেলা করেন। এখন তার বয়স ৭৬ বছর। গত সপ্তাহে বইটি ফেরত দিতে নিজের শহরে ফিরে গিয়েছিলেন। লাইব্রেরিয়ানেরা হিসাব কষে ডেভিডকে দেখান, প্রতিদিন ২০ পেন্স জরিমানা হিসেবে এখন তার মোট দণ্ড ৪২ হাজার ৩৪০ পাউন্ড বা ৫৫ লাখ ৪১ হাজার ২০২ টাকা!
অবশ্য পাঠাগার কর্তৃপক্ষ হিকম্যানের জীবনের গল্প শুনে এতোটাই অভিভূত যে, তার জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছে। এ নিয়ে এক্সপ্রেস এবং স্টার পত্রিকাকে হিকম্যান বলেন, ‘আমার গাড়িটি ছিল ১৯৪৭ সালের ফোর্ড পপুলার। সেই দিনগুলোতে আপনার এমন একটি গাড়ি থাকা মানে মেয়েদের মনোযোগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সিরিয়ালের এক নম্বরে থাকবেন!’
অবসরপ্রাপ্ত হোটেল ম্যানেজমেন্ট পেশার হিকম্যান আরও বলেন, ‘আমি স্কুল থেকে ফেরা মেয়েদের দিকে হাত নাড়ছিলাম। আমার গাড়িটি যে রাস্তার মাঝখানে চলে গেছে টেরই পাইনি। হঠাৎ মেয়রের গাড়ি দেখে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গিয়েছিলাম। পরে নিজের পক্ষে কোনো যুক্তি দাঁড় করানো যায় কি না সেই আশায় লাইব্রেরি থেকে বইটি ধার নিয়েছিলাম।’
সেই সময় মায়ের বকুনির কথা স্মরণ করে হিকম্যান বলেন, ‘আমি যখন আদালতে গিয়েছিলাম, তখন মা খুব রাগ করেছিলেন। লোকেরা তখন কর্তৃপক্ষের আদেশ মেনে চলার বিষয়ে খুব সচেতন ছিল। আমি ওই সময় সংবাদপত্রের সব কপি কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম যাতে মানুষ খবরটি দেখতে না পারে!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।