আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একটি কুকুর দাঁড়িয়ে আছে। লেজ নাড়তে নাড়তে তার দিকে ছুটে আসে দুটি ছাগলছানা। তারপর কুকুরটির দুধ পান করতে থাকে। কুকুরটি মাতৃস্নেহে তাদের দুধ খাওয়াচ্ছে।
এমন অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডাল থানার জামবাদ কোলিয়াড়ি এলাকায়। জানা গেছে এক ‘অসম’ বন্ধুত্বের গল্প। মায়ের ব্যথার কাহিনি।
বাড়ির মালিক প্রভাত বাউড়ি জানান, তাদের কুকুরের নাম জুলি। একটি ছাগলও ছিল বাড়িতে। দুজনের খুবই বন্ধুত্ব ছিল। মাস কয়েক আগে চারটি বাচ্চা প্রসব করে জুলি। কিছুদিন পর তার ছাগল বন্ধুও সন্তানসম্ভবা হয়। তার দুই বাচ্চা হয়। কিন্তু অসুখের কারণে কুকুরের একটি বাচ্চাকেও বাঁচানো যায়নি।
দিন কয়েক আগে রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় মারা যায় মা ছাগলটি। তারপর যেন তার ছেড়ে যাওয়া বাচ্চার দায়িত্ব নিজে তুলে নিয়েছে জুলি। তাদের দুধ খাওয়ানো থেকে চোখে চোখে রাখা, সবটাই সে করছে। যেন একদিকে বন্ধুবিয়োগের পর তার সদ্যোজাতদের প্রতি কর্তব্যবোধ, অন্যদিকে নিজের মাতৃত্বের সাধ সে এভাবেই নিচ্ছে।
এখন কুকুরটির সঙ্গেই থাকে ছাগলের বাচ্চাগুলো। তার সঙ্গেই থাকা, খাওয়া এবং ঘুম। এই দৃশ্য দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি স্থানীয় এক নারী।
তার কথায়, ‘কুকুরটিকে দেখে মায়ের ব্যথা বুঝি। আমার নিজের ছেলে ছয় মাস আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ওদের দেখে আমার মনে হলো, মায়েদের যন্ত্রণা একই। মানুষ হোক বা পশু, কোনো মা-ই যেন ব্যথা না পায়।’
আর প্রভাত বাউড়ির কথায়, বন্ধুত্বের উদাহরণ এমনই। ছাগলের মৃত্যুর পর ও (জুলি) এত ব্যথা পেয়েছে, তার বাচ্চাদের নিজে বড় করার চেষ্টা করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।