ইসমাঈল সিদ্দিকী : বিবাহ হলো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং একটি পবিত্র বন্ধন। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই একে অন্যের কাছে উপকৃত ও পরিতৃপ্ত হওয়ার মাধ্যম। এটি ব্যবসা বা অর্থ-উপার্জনের মাধ্যম নয়। তেমনি বর-কনেও ব্যবসার পণ্য নয়, যাদেরকে বিক্রি করে পয়সা কামানো হবে।
অতএব একটি হালাল বন্ধনকে হারাম অর্থোপার্জনের মাধ্যম বানানো কোনো সুস্থ বিবেকবান ব্যক্তির কাজ হতে পারে না।
যৌতুক দাবির ফলে দাম্পত্য সম্পর্কের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যায়। পরিবারে শান্তির বদলে অশান্তির আগুন জ্বলতে থাকে। ঝগড়া-বিবাদ গালিগালাজ এমনকি মারধর পর্যন্ত গড়ায়।
অনেক পরিবার রয়েছে, যারা দিন আনে দিন খায়, অনেক টানাপোড়েনে সংসার চালায়, যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এরকম পরিবারের অভিভাবকরা মেয়ের যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে করতে একসময় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তবুও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেদের সর্বোচ্চটা বিলিয়ে দেয়।
যৌতুক প্রথার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বিভিন্ন কারণ জড়িত। এসব কারণের মধ্যে সামাজিক কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস, সামাজিক প্রতিপত্তি ও প্রতিষ্ঠা লাভের মোহ, দারিদ্র্য, অজ্ঞতা ও উচ্চাভিলাষী জীবনযাপনের নেশা ইত্যাদি কারণ উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
এসব অপসংস্কৃতি তখনই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে যখন মানবজীবনের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত মৌলিক মূল্যবোধগুলোর পতন ঘটে এবং ঐসব কৃত্রিম মূল্যবোধ তার স্থলবর্তী হয় যার ভিত্তি হচ্ছে লোভ- লালসা, ভোগবাদ ও বস্তুবাদ।
সমাজ থেকে এই অভিশপ্ত ব্যাধি মুছে দিতে চাইলে নারীকে পণ্যদ্রব্য হিসেবে বিবেচনা না করে নিজেদের অর্ধাঙ্গী হিসেবে সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। পুরুষদের অর্থলোভ ত্যাগ করে নারীর গুণ ও গৌরবের তাৎপর্য উপলব্ধি করে সমাজে নারীর শরয়ীগত প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
যৌতুক দেয়া ও নেয়াকে ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে সকলকে বিবেচনা করতে হবে। মানুষের সম্পদ অন্যায় আর অন্যায্যভাবে নিজায়ত্তে আনার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। তবেই এ যৌতুক প্রথা সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় নিবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।