আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিমান হামলায় পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীর তালিকাভুক্ত এই ব্যক্তি বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে সুবহানআল্লাহ মসজিদে চালানো ভারতীয় হামলায় তার পরিবারের সদস্যরা প্রাণ হারান।
নিহতদের পরিচয়
জেইএম (জইশ-ই-মোহাম্মদ) থেকে বুধবার জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের বড় বোন, তার স্বামী, এক ভাগ্নে ও তার স্ত্রী, এক ভাগ্নি এবং পাঁচ শিশু রয়েছে।
এছাড়াও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় আজহারের তিনজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও তাদের একজনের মা নিহত হয়েছেন।
২০১৯ সালের হামলার পটভূমি
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জইশ-ই-মোহাম্মদ ভারত-শাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়, যাতে ভারতের ৪০ সেনা সদস্য নিহত হন। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।
পাকিস্তানে বিমান হামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান
ভারতের বিমান হামলার পর পাকিস্তান ভারতের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতিকা শ্রীবাস্তবকে তলব করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বিনা উসকানিতে পাকিস্তান এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের একাধিক স্থানে ভারতীয় হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামলায় নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছেন এবং এটি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
হতাহতের সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধ
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ভারতীয় বিমান হামলায় ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে পাকিস্তান ৮ জনের মৃত্যুর কথা বললেও, ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়—তাদের কাছে পাকিস্তানে বেসামরিক হতাহতের কোনো তথ্য নেই।
ভারতের প্রতিক্রিয়া: সন্ত্রাস দমনে দৃঢ় অবস্থান
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলেন, “পহেলগামে আমাদের নিরীহ ভাইদের হত্যাকাণ্ডের জবাবে অপারেশন সিঁদুর চালানো হয়েছে।” তিনি বলেন, “ভারত সন্ত্রাসবাদকে মূল থেকে নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মন্তব্য করেন, “বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে।”
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযানকে সমর্থন বিরোধী দলের
ভারতের বিরোধী দলগুলোও পাকিস্তানে চালানো সামরিক অভিযানে সমর্থন জানিয়েছে।
কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “এটা জাতীয় ঐক্য ও সংহতির সময়।” তিনি জানান, তার দল সীমান্ত সন্ত্রাস রোধে সশস্ত্র বাহিনীর পাশে রয়েছে।
এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পাকিস্তানকে “ব্যর্থ জাতি” আখ্যা দিয়ে ভারতের সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের জবাব: জবাব আসবে পছন্দসই সময় ও স্থানে
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গভীর রাতে ভারতের হামলাকে কাপুরুষোচিত কাজ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং কড়া জবাব দেওয়ার হুমকি দেন।
বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন তিনি।
ভারত দাবি করে, এই হামলা ছিল পহেলগামের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ। এতে শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
চীনের প্রতিক্রিয়া
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সামরিক অভিযানকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছে। মুখপাত্র বলেন, উভয় দেশ যেন শান্ত থাকে, সংযম দেখায় এবং পরিস্থিতি জটিল না করে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.