জুমবাংলা ডেস্ক : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে প্রতিদিন আড়াই থেকে ৩ লিটার দুধ দিচ্ছে ১০ মাসের বকনা বাছুর। নিজে মায়ের দুধ পান করে বেঁচে থাকলেও দুধের ওই বাছুরটিই দিচ্ছে এই পরিমাণের দুধ। পাশাপাশি বাছুরটির মা প্রতিদিন দুধ দিচ্ছে দেড় লিটার।
এ নিয়ে ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের নলছিয়া গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে সখীপুর উপজেলায়ও এমন ঘটনা ঘটেছিলো।
বকনা ওই বাছুরটির মালিক আব্দুস ছালাম মিয়া নলছিয়া গ্রামেরই বাসিন্দা। আব্দুস ছালামের স্ত্রী পারভীন বেগম ১০ মাস বয়সের ওই বকনা গরুর ওলান থেকে নিয়মিত দুধ সংগ্রহ করছেন। এমন দৃশ্য দেখতে উৎসুক জনতা ওই বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। সকালে ও বিকেলে দেড় লিটার করে একদিনে তিন লিটার দুধ সংগ্রহ করছেন বলে জানিয়েছেন ছালামের স্ত্রী।
তিনি জানান, একদিন দুধ সংগ্রহ না করলেও বকনার ওলান থেকে দুধ ঝরে পড়ে। ৭-৮ মাস আগে এক লাখ ৩ হাজার টাকায় বাছুরসহ একটি গাভী গরু কিনে লালন-পালন করছেন। বাছুরটির মা শুরু থেকে ৩-৪ লিটার করে দুধ দিতো। গেল রমজান মাসে ১০ মাস বয়সী বাছুরকে নদীতে গোসল করাতে গেলে সেটির ওলান ফোলা দেখে ধারণা করেন- এখানে দুধ জমেছে। তিনি তাৎক্ষণিক গরুটির ওলান থেকে দুধ সংগ্রহ করেন। প্রথম কয়েক দিন আধা লিটার দুধ পান তিনি।
তিনি আরও জানান, ১০ মাস বয়সী বকনা বাছুরটি প্রসব ছাড়া দুধ দেওয়ার বিষয়টি দেখে আমরা অবাক হয়েছি। শুরুতে দুধের পরিমাণ কম হলেও এখন দুধের পরিমাণ বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল ২ থেকে ৩ লিটার করে দুধ দিচ্ছে। বাছুরটির মাও দেড় লিটার করে দুধ দিচ্ছে। প্রথমে বাছুরের দুধ ছাগলের বাচ্চাকে খাওয়ালেও এখন পরিবারের সদস্যরা ওই দুধ পান করছেন। মাঝে-মধ্যে প্রতিবেশিদেরও দিচ্ছেন।
স্থানীয় বাদশা মিয়া, আনছার আলীসহ কয়েকজন জানান, সাধারণত যে গাভী বাচ্চা জন্ম দেয় সেই গাভীই দুধ দিয়ে থাকে। অল্প বয়সী বাছুরটি দুধ দিচ্ছে এটা একটা বিরল ও ব্যতিক্রম ঘটনা। বিষয়টি শুনে প্রথম বিশ্বাস করছিলাম না। পরে ছালামের বাড়িতে গিয়ে দেখেছি ঘটনাটি সত্যি। বাছুরের দুধ দেওয়া নিয়ে অবাক ও আশ্চর্য হয়েছি। এই খবর শুনে আশপাশের লোকজন ছাড়াও এ দৃশ্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুকুমার চন্দ্র দাস বলেন, হরমোনজনিত কারণে এমনটা অনেক সময় হয়ে থাকে। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এ ঘটনাটি ভিন্ন রকম মনে হলেও ওই দুধ পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত। যে কেউ ওই বাছুরের দুধ পান করতে পারবেন। এ ধরনের ঘটনা দেশে আগেও ঘটেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া জানান, এ ধরণের বাছুর গরুর দুধ পান করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। ওই দুধ পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। মূলত অতিমাত্রার হরমোন পরিবর্তনজনিত কারণে বাচ্চা প্রসব ছাড়াই দুধ দিতে পারে গরু। এ ঘটনা খুব বিরল, তা নয়। এর আগে জেলার সখীপুর উপজেলাতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এটি স্বাভাবিক ঘটনা। আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নেই বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।