বিনোদন ডেস্ক : রুপালি পর্দায় নায়ক-নায়িকাদের রসায়ন দেখে মুগ্ধ হন দর্শক। তাদের বাস্তব জীবনের প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ নিয়েও কৌতূহল কম নেই! বলিউডের অনেক তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রী ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন; কেউ কেউ সংসার বাঁধলেও অনেকের প্রেম মাঝ পথে ভেঙে গেছে। নানা কারণে সম্পর্কের ইতি টেনেছেন তারা। তবে বলিউডের বেশ কজন জুটি রয়েছেন, যাদের সম্পর্ক ভেঙেছে মায়ের কারণে। এমন কটি ব্যর্থ প্রেমিক জুটিকে নিয়ে এই আয়োজন।
প্রীতি জিনতা
ব্যবসায়ী নেস ওয়াদিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা। খবরটি ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে আসে এই খবর। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ জুটিকে একসঙ্গে দেখা যায়। ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব দল কিনেন প্রীতি ও নেস। ওই সময়ে সবাই মনে করেছিলেন, বিয়ে করে ঘর বাঁধতে যাচ্ছেন এই যুগল। কিন্তু ২০০৯ সালে নেসের বিরুদ্ধে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেন প্রীতি জিনতা। নেসের মা মৌরিন কখনো প্রীতির সঙ্গে ছেলের সম্পর্ক মেনে নেননি। এই সম্পর্ক নিয়ে নেসের মা যে ক্ষিপ্ত ছিলেন, তা এক বক্তব্যে পরিষ্কার হয়। মৌরিন বলেছিলেন— ‘নেস যদি একটি জেব্রাকেও বিয়ে করে তা-ও আমার কিচ্ছু যায় আসে না।’ নেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন প্রীতি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন তিনি। সেখানে জেনে গুডএনাফকে বিয়ে করেছেন এই অভিনেত্রী।
রানী মুখার্জি-গোবিন্দ
২০০০ সালে ‘হাদ কার দি আপনে’ সিনেমায় একসঙ্গে প্রথম অভিনয় করেন রানী মুখার্জি-গোবিন্দ। এ সিনেমার সেটে তাদের প্রথম দেখা হয়। সিনেমাটির শুটিং সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয়। ওই সময়ে গোবিন্দ বিবাহিত। ঘরে সুনিতা আহুজার মতো স্ত্রী থাকার পরও রানী মুখার্জির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি।
বলিউড শাদি ডটকম জানিয়েছে, হোটেল রুমে রানী-গোবিন্দকে একসঙ্গে ধরে ফেলেন প্রখ্যাত এক সাংবাদিক। এ খবর ছাপা হওয়ার পর দারুণভাবে আহত হন গোবিন্দর স্ত্রী সুনিতা। তারপর গোবিন্দর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুনিতা। এরপর জল অনেক দূর গড়ায়। সর্বশেষ ভেঙে যায় রানী-গোবিন্দর প্রেম। এই সম্পর্ক ভাঙার পেছনের কারণ শুধু সুনিতা নয়। বরং এতে যুক্ত আছেন রানীর মা কৃষ্ণা মুখার্জিও।
বলিউড শাদি ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রানী মুখার্জিকে দামি দামি উপহার দিতেন গোবিন্দ। কিন্তু মেয়ের এই উপহার গ্রহণের বিষয়টি মোটেও সমর্থন করেননি রানীর মা কৃষ্ণা। গোবিন্দর সঙ্গে এই সম্পর্ক রানী সামনে নিয়ে যাক তা চাননি তিনি। বরং এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে কাজে মন দেওয়ার জোর তাগিদ দেন রানীর মা।
কারিশমা-অভিষেক
বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর ও অভিষেক বচ্চনের প্রেম বলিপাড়ার আলোচিত বিষয়। ১৯৯৭ সালে বিয়ে করেন অভিষেক বচ্চনের বোন শ্বেতা নন্দা। এ বিয়ের অনুষ্ঠানে কাছাকাছি আসেন কারিশমা-অভিষেক। কারিশমা তখন বলিউডের তারকা অভিনেত্রী। অন্যদিকে অভিষেক তার ক্যারিয়ার শুরু করেননি। তারপরও বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভের পুত্রের প্রেমে পড়েন কারিশমা।
দীর্ঘ পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম করেন অভিষেক-কারিশমা। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে কেউ জানতেন না। ২০০০ সালে ‘রিফিউজি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন অভিষেক। এ সিনেমায় কারিশমার বোন কারিনা কাপুরের সঙ্গে অভিনয় করেন অভিষেক। ২০০২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আসে কারিশমা-অভিষেকের প্রেমের খবর। কারণ ২০০২ সালের অক্টোবরে অমিতাভের জন্মদিনে এ যুগলের বাগদানের ঘোষণা করা হয়। অভিষেকের মা জয়া বচ্চন কারিশমাকে হবু পুত্রবধূ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। বাগদানের চার মাস পর এ বিয়ে ভেঙে দেন কারিশমা-অভিষেকের পরিবার। তখন বিয়ে ভাঙার কারণ কেউ-ই জানাননি। অবশ্য, জয়া বচ্চন বলেছিলেন— ‘এটি অভিষেকের সিদ্ধান্ত।’
তবে কারিশমা-অভিষেকের বিয়ে ভাঙার অনুসন্ধান করে ভারতীয় মিডিয়া। তাদের তথ্য মতে— কারিশমার মা ববিতারে কারণে এই বাগদান ভেঙে যায়। কারণ কারিশমা তখন তারকা অভিনেত্রী আর অভিষেক কেবল ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। তা ছাড়া ওই সময়ে অমিতাভ বচ্চনের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লোকসান গুনছিল। এছাড়াও কারিশমার মা ববিতা চাচ্ছিলেন, অমিতাভ তার সম্পদের কিছু অংশ অভিষেকের নামে যেন লিখে দেন। কারণ মেয়ে কারিশমার ভবিষ্যত অনিশ্চিয়তায় রাখতে চাননি ববিতা। কিন্তু এই বিষয়টি ভালো লাগেনি অমিতাভ-অভিষেকের। তারপরই ভেঙে যায় এই বিয়ে।
বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরের বছরই সঞ্জয় কাপুরকে বিয়ে করেন কারিশমা। এ সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে তাদের। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে সন্তানদের বড় করছেন কারিশমা। অন্যদিকে বিশ্ব সুন্দরী ঐশ্বরিয়াকে বিয়ে করেছেন অভিষেক। এ সংসারে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সংসার জীবনে বেশ ভালো সময় পার করছেন অভিষেক।
শহিদ-কারিনা
বলিউডের আলোচিত তারকা জুটি শহিদ কাপুর ও কারিনা কাপুর। মাত্র ২৩ বছর বয়সে শহিদ যখন কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, ঠিক তখন কারিনার প্রেমে পড়েন তিনি। ওই সময়ে ভারতীয় মিডিয়াকে কারিনা কাপুর বলেছিলেন, ‘আমাদের মাঝে শক্তিশালী একটি বন্ধন রয়েছে।’ অন্যদিকে শহিদ কাপুর বলেছিলেন, ‘আমরা আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্বের মানুষ। আমরা পরস্পরের শূন্যস্থান পূরণ করছি।’ কিন্তু ২০০৭ সালে ‘যাব উই মেট’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন তাদের বিচ্ছেদের খবর সামনে আসে। শুরুতে তাদের ভক্তরা ভেবেছিলেন, সিনেমার প্রচারের জন্য বিচ্ছেদের গুঞ্জন উসকে দিয়েছেন তারা। কিন্তু এই ভাবনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে আলাদা হয়ে যান এই জুটি। তবে কী কারণে ভেঙে যায় শহিদ-কারিনার প্রেম, তার সঠিক কারণ জানাননি কেউ-ই। তবে কারিনার মা ববিতা ও বোন কারিশমা কাপুর এই সম্পর্ক মেনে নেননি।
বলিউড শাদি ডটকম জানিয়েছে, কারিনার মা শহিদের সঙ্গে কারিনার সম্পর্ক ভালোভাবে গ্রহণ করেননি ববিতা ও কারিশমা। যদিও শহিদ কাপুর স্বনামধন্য একটি ফিল্মি পরিবারের সন্তান। তারপরও তারা মনে করেছেন, শহিদের পরিবারের সঙ্গে তাদের ঠিক মেলে না। এ ছাড়াও তারা মনে করতেন— আবেগের বশে শহিদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কারিনা। সুতরাং এখান থেকে বেরিয়ে ক্যারিয়ারে মনোযোগ দেওয়া উচিত। বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের সঙ্গে বিয়ের পর কারিনা কাপুর এখন খান হয়ে গেছেন। এ সংসারে তাদের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে মীরা রাজপুতের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন শহিদ কাপুর। এ দম্পতির এক কন্যা ও একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।