জুমবাংলা ডেস্ক : মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, যে কোটা বাতিলের জন্য এত মানুষ আন্দোলন করলেন, সেটা বহাল রাখার হলো কীভাবে?
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
এসময় ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘সারাবাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতেও দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এসময় হিসাববিজ্ঞান বিভাগ ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী আসিফ খান বলেন, যে কোটাপ্রথা বাতিলের জন্য ২ হাজারের ও অধিক মানুষ জীবন দিয়েছে, হাজার হাজার মানুষেরা অঙ্গহানি হয়েছে; সেই কোটা এখনও বহাল আছে। এর চেয়ে নিন্দনীয় ঘটনা আর কী হতে পারে! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ভুলে গেছে যে, তারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। একজন ভর্তি পরীক্ষায় ৭২ পেয়ে চান্স পায় না আর একজন ৪৪ পেয়ে কীভাবে চান্স পায়? সংবিধান সংস্কারের আগে কোটা সংস্কার হোক। যদি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কোটা সরিয়ে না নেওয়া হয় আবার রাজপথে নামবে।’
ঢাবি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তুষার বলেন, ‘দুই হাজার মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট। তাদের সাহস কী করে হয়, এখনও কোটা প্রথা বহাল রাখে। ৪১ পেয়ে চান্স পায় আর একজন তার থেকে বেশি নম্বর পেয়ে চান্স পায় না। সরকার কি আমাদের সঙ্গে তামাশা শুরু করছে?
তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, আপনারা আবার হাসিনার মতো হবেন না। যদি আবার দেখি বৈষম্যমূলক কোটা আছে, তাহলে আমরা আপনাদের মনে করিয়ে দিবো হাসিনার পরিনতির কথা।’ এসময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার পাশাপাশি পোষ্য কোটা বাতিলের ও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এর আগে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতেও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর উল্লেখ করে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য ২ শতাংশ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের। বিষয়টি নিয়ে সেভাবে আলোচনা না হলেও ফল প্রকাশের পর অনেকেই এ নিয়ে কথা বলছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এখনো কিসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।
পরে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (সরকারি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ) ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ গণমাধ্যমে বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা মেনে কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। আগে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পেতেন। তবে এ বছর শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরাই কোটা সুবিধা পাবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।