আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীতে বিস্ময়ের কোনো শেষ নেই। দেশে দেশে ছড়িয়ে আছে হাজারো সব বিস্ময়কর অবিশ্বাস্য সব ঘটনা। এই যেমন ভারতের একটি মন্দির আছে, যেখানে ছেলেরা মেয়ে সেজে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করেন আবার পূজা শেষ করে বেরিয়েও আসেন।
এমন বিরল প্রথার মন্দিরটি অবস্থিত ভারতের দক্ষিণের কেরালা রাজ্যে। সেখানকার কোল্লামের চাভারায় অবস্থিত কোট্টানকুলাঙ্গারা দেবীর মন্দিরে উৎসব হয়। আর সেই উৎসবে যোগ দিতে সারা ভারত থেকে আসা পুরুষরা নারী সেজে মন্দিরে পূজা সারেন।
এর পেছনে রয়েছে পৌরাণিক উপকথা। বহুকাল আগের কথা। কয়েকজন রাখাল বালক গরু চড়াতে হাজির সেখানে। চারিদিকে তখন সবুজ বনানী। গরুরা যখন মনের সুখে চড়ে বেড়াত, তখন রাখাল বালকরা নিজেদের মধ্যে খেলায় মেতে উঠত। যার একটি খেলা ছিল মেয়ে সাজা।
রাখাল বালকরা মেয়ে সেজে আশপাশের ফুলগাছ থেকে সংগ্রহ করা ফুল নিয়ে হাজির হতো একটি পাথরের সামনে। তারপর সেই পাথরে ফুল নিবেদন করতো। নিছকই খেলার ছলে এমনভাবে একদিন ফুল পাথরে দিতেই সেখানে আবির্ভূত হন ঈশ্বর।
সেই কথা ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। আশপাশে কথাটা জানাজানি হওয়ার পর অনেক পুরুষও ভাবেন তারাও যদি ওই পাথরে ফুল দেন তাহলে ঈশ্বরের দেখা মিলতে পারে। তাদের ইচ্ছাপূরণ হতে পারে। সেই থেকে ক্রমে বাড়তে শুরু করে পুরুষদের মেয়ে সেজে এই পাথরে ফুল নিবেদন।
কালের পরিক্রমায় এই পাথর দেবতার রূপ পেলো। তৈরি হল বিশাল মন্দির। ভক্ত সমাগম বাড়তে লাগলো। আর কথিত আছে, ওই পাথরটিও নাকি সময়ের সঙ্গে বড় হতে থাকে। এখন প্রতিবছর বসন্তে ১৯ দিন ধরে কেরালার কোল্লামের চাভারায় অবস্থিত কোট্টানকুলাঙ্গারা দেবীর মন্দিরে উৎসব হয়। এখানে দেবী বলতে এই পাথর পূজিত হয়।
এই ১৯ দিনের উৎসবের শেষ দুই দিনে দূরদূরান্ত থেকেও বিভিন্ন বয়সের পুরুষরা নারী সেজে হাতে প্রদীপ ও থালায় ফুল ও নারকেল নিয়ে এই মন্দিরে পুজো দিতে হাজির হন। এই প্রথাকে বলা হয় কোট্টানকুলাঙ্গারা চামায়াভিলাক্কু।
যেসব পুরুষ মহিলা সেজে উঠতে পারেন না, তাদের জন্য মন্দিরের বাইরে মেকআপ আর্টিস্টও পাওয়া যায়। যারা তাদের মেয়ে সাজিয়ে দেন। এজন্য টাকা খরচ করতে হয়। আর দুই দিনে বেশ ভালো আয় করেই বাড়ি ফিরে যান মেকাপ আর্টিস্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।