স্পোর্টস ডেস্ক : ক্লাব ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটাই বার্সেলোনায় কাটিয়েছেন লিওনেল মেসি। কাতালান ক্লাবটির বয়সভিত্তিক দল থেকে শুরু করে যুবদল হয়ে একপর্যায়ে উত্থান মূল দলে। এরপরের সময়টা কেবল একটার পর একটা ইতিহাস রচনার। ২০২১–এর আগস্টে যখন বার্সা ছাড়লেন মেসি, ততদিনে তিনি ক্লাবটার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়।
বার্সাতে মেসির উত্থান খুব কাছ দেখে যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের একজন রাফা মার্কেস। ২০০৩ সালে স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যোগ দিয়ে ২০১০ সাল পর্যন্ত খেলেছেন মেক্সিকান সাবেক সেন্টারব্যাক। অন্যদিকে বার্সার মূল দলের জার্সিতে মেসির শুরুটা ২০০৫ সালে। এরপর থেকেই বাঁ পায়ের জাদুতে মোহাবিষ্ট করে রেখেছেন পুরো দুনিয়াকে।
ওই সময়ের ঝাঁকড়া চুলের তরুণ মেসির বল পায়ে দৌড়ের ভিডিও সার্চ করলেই পাওয়া যাবে ইউটিউবে। মাত্র ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির ক্ষুদে একজন ড্রিবলে ঘোল খাওয়াচ্ছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা ডিফেন্ডারদের। আর্জেন্টাইন জাদুকরের ড্রিবল মাঠে কাছ থেকে দেখেছেন মার্কে। মেসির ড্রিবল সামলাতে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ঘুম যে হারাম হতো, এটা জানা কথা। কিন্তু অনুশীলনে তো নিজ দলের ডিফেন্ডারদের বিপক্ষেই কারিকুরি করতেন মেসি। আর এ নিয়ে আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে ঝগড়া লেগে গিয়েছিল মার্কেসের।
🚨 Barcelona's idea is to sign a top coach for next season, but the list is very short. The dream is Klopp. In case it's not possible to sign a coach of his caliber, the option of promoting Rafa Marquéz will be studied. @sport pic.twitter.com/dNeIwXntKS
— barcacentre (@barcacentre) February 6, 2024
সাবেক মেক্সিকান বার্সা ডিফেন্ডার সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, অনুশীলনের সময় মেসির ড্রিবল সামলাতে না পেরে হতাশ হয়ে যেতেন তিনি। একপর্যায়ে রেগেমেগে তরুণ মেসিকে কম ড্রিবলিংয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে মেসির সঙ্গে লেগে যায় মার্কেসের। তর্কাতর্কি এতটাই প্রকট আকার ধারণ করে যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সে সময়ের বার্সা কোচ পেপ গার্দিওলাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
মেক্সিকান সংবাদ উপস্থাপক ইয়র্দি রোসাদাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কেস বলেছেন, ‘আমরা জানতাম মেসি তিন-চারজনকে ড্রিবল করতে পারে। কিন্তু মাঝে মাঝে এটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নিয়ে যেত। আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করতাম। ওকে বলা হয়েছিল, এখানে ড্রিবল করতে, এখানে না করতে।’
মার্কেস আরও বলেছেন, ‘আমার ওই পরামর্শের পর মেসির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। আমরা তর্কে জড়িয়ে পড়ি। শেষমেষ গার্দিওলার হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়। মেসি এবং আমি কখনোই ভালো বন্ধু ছিলাম না। আমরা কেবল সতীর্থ ছিলাম।’
মেসি বার্সার সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার পর বেশিদিন ক্লাবটিতে থাকা হয়নি মার্কেসের। ২০১০ সালে বার্সা ছাড়েন পাঁচবার বিশ্বকাপ খেলা এ মেক্সিকান ডিফেন্ডার। ২০২২ সালে আবারও ফিরে আসেন কাতালান ক্লাবটিতে। তবে এবার কোচ হয়ে। বার্সার দ্বিতীয় সারির দল বার্সা আতলাতিকের দায়িত্ব নিয়েছেন মার্কেস। গুঞ্জন আছে, এ মৌসুম শেষে শাভি এরনান্দেস মূল দলের দায়িত্ব ছাড়লে বার্সার ডাগআউটে দেখা যেতে পারে মার্কেসকে।
শাভির পর আগামী মৌসুমে বার্সার সম্ভাব্য কোচের তালিকায় আর্সেনালের মিকেল আর্তেতা, ব্রাইটনের রবের্তো দি জারবি, এই মৌসুমে স্প্যানিশ লিগে চমক দেখানো জিরোনার মিশেল, বায়ার্ন মিউনিখ ও জার্মানির সাবেক কোচ হান্সি ফ্লিক, বায়ার্নের সাবেক ও জার্মানির বর্তমান কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমান, ইতালিয়ান ক্লাব বোলোনিয়ার বর্তমান কোচ ও বার্সার সাবেক ইতালিয়ান থিয়াগো মোত্তার নাম শোনা যাচ্ছে, পাশাপাশি বার্সার আর্থিক দুরবস্থা বিবেচনায় আসছে মার্কেসের নামও।
অবশ্য বার্সার ক্রীড়া পরিচালক দেকো বলে দিয়েছেন, ‘ক্লাবের ভেতরে ব্যক্তি মার্কেসের আবেদন বাড়ছে, তবে তিনি শুধু জরুরি অবস্থাতেই ক্লাবের মূল দলের কোচ হবেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।