ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার হয়ে শেষবারের মতো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেললেন লিওনেল মেসি। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বুয়েনস আইরেসের এস্তাদিও মনুমেন্টালে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটি ৩-০ গোলের জয় দিয়ে শেষ করেছে আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচে দুটি গোল করেন মেসি, অপর গোলটি আসে লাউতারো মার্টিনেজের পা থেকে।
এদিন মেসির সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ ঘিরে স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন ৮০ হাজারের মতো দর্শক। উপস্থিত ছিলেন পুরো পরিবারও। ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীতের সময় তিন ছেলে এসে দাঁড়িয়েছিল পাশে। আর মাঠের চারপাশে গগনবিদারী আওয়াজ, ‘ওলে, ওলে, ওলে…মেসি, মেসি, মেসি!’ দলকে জিতিয়ে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে আবেগঘনই হয়ে পড়েন মেসি।
দেশের মাটিতে নিজের শেষ অফিশিয়াল ম্যাচ খেলা প্রসঙ্গে কিংবদন্তি বলেছেন, ‘অনেক আবেগ কাজ করছে। মাঠে অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে গিয়েছি। নিজের মানুষদের সামনে আর্জেন্টিনায় খেলাটা সব সময়ই আনন্দের। বছরের পর বছর আমরা ম্যাচগুলো এভাবেই উপভোগ করছি। এখানে এভাবে শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে, যেটা স্বপ্ন দেখেছি সব সময়।’
মেসি এরপর বলেছেন,‘অনেক বছর ধরে অনেক কিছু বলা হয়েছে। তবে আমি সব ভালো কিছুর সঙ্গেই থাকব। যেসব সতীর্থরা চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি, এবং যারা পরবর্তীতে পেয়েছে—সবার সঙ্গে কাটানো সময়গুলোই সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে। আজকের ম্যাচটিই ছিল আমার দেশের মাটিতে প্রতিযোগিতামূলক শেষ ম্যাচ।’
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা প্রসঙ্গে মেসি সেই পুরোনো কথাই বলেছেন। দিন ধরে ধরে এগোতে চান তিনি, ‘একই কথা, যেটা এর আগেও বলেছি বিশ্বকাপ নিয়ে, মনে হয় না আরেকটি খেলতে পারব। কারণ আমার বয়স। বড় যুক্তিটা হলো, আমি কুলিয়ে উঠতে পারব না। কিন্তু আর বেশি দিন তো নেই। আমি এটায় (বিশ্বকাপে) খেলার প্রেরণা পাচ্ছি। যেটা এর আগেও বলেছি, আমি দিন ধরে ধরে এবং ম্যাচ ধরে ধরে এগোই।’
মেসি এরপর ব্যাখ্যা করেন, ‘দিন ধরে ধরে এগিয়ে ভালো থাকা এবং নিজের সঙ্গে সৎ থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভালো অনুভব করলে (খেলাটা) উপভোগ করি। ভালো না লাগলে করি না। তাই ভালো না লাগলে সেখানে (বিশ্বকাপে) না থাকাটাই আমার পছন্দ। দেখা যাক কী হয়, বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’
মেসি জানিয়েছেন, এই মৌসুম শেষ করে ইন্টার মায়ামির হয়ে এমএলএস-এ প্রি-সিজন খেলবেন। তারপর ছয় মাস সময় পাবেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য,‘ম্যাচ ধরে ধরে মৌসুমটা শেষ করব। এরপর প্রাক্–মৌসুম পাব এবং ছয় মাস সময় বাকি থাকবে। দেখা যাক কী হয়। আশা করি ২০২৬ সালের প্রাক্–মৌসুমটা ভালো কাটবে এবং এমএলএসের মৌসুম। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’
২০০৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় মেসির। এরপর থেকে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ফাইনাল খেললেও শিরোপা হাতছাড়া হয়। অবশেষে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে স্বপ্ন পূরণ করেন ফুটবল জাদুকর। এখন এলএমটেন বিশ্বকাপে খেলেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।