বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : মেটা তথা ফেসবুকের সফটওয়্যার নির্মাতাদের জন্য বার্ষিক আয়োজন ‘কানেক্ট ডেভেলপারস কনফারেন্স’। ২৭-২৮ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে নতুন সব সফটওয়্যার প্রগ্রামিং প্রটোকল, প্ল্যাটফরম আপগ্রেড এবং নতুন সব সফটওয়্যার সেবার খুঁটিনাটি আলোচনার পাশাপাশি মার্ক জাকারবার্গ উন্মোচন করেছেন বেশ কিছু আনকোরা নতুন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারও।
অনেকেই ধারণা করেছিলেন, এবারের কনফারেন্সে মেটাভার্সের ইতি টানবেন মার্ক জাকারবার্গ। কিন্তু তা না করে মেটাভার্স ব্যবহার যে আরো সহজ করার জন্য কাজ চলছে, সেটাই জানালেন মেটাপ্রধান।
তবে মেটাভার্সকে তিনি ভার্চুয়াল নয়, বাস্তব ও ভার্চুয়াল মিশ্রণ এআর প্ল্যাটফরম হিসেবে তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। আর তাকে কেন্দ্র করেই মেটা দুটি নতুন হার্ডওয়্যার উন্মোচন করেছে—‘মেটা কোয়েস্ট ৩’ এবং রে-ব্যানের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি ‘মেটা স্মার্ট গ্লাসেস’।
মেটা কোয়েস্ট ৩
ডিভাইসটিকে আমজনতার প্রথম মিক্সড-রিয়ালিটি হেডসেট বলছে মেটা। অ্যাপলের ভিশন প্রো এখনো বাজারজাত শুরু হয়নি।
মাইক্রোসফটের হলো-লেন্স শুধু করপোরেট পর্যায়েই রয়ে গেছে। গুগলের গ্লাস প্রজেক্ট বহু আগেই পরিত্যক্ত, কখনো সব ক্রেতার জন্য উন্মুক্তও করা হয়নি।
বলা যায়, মেটা কোয়েস্ট ৩-এর সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ এআর হেডসেটের ব্যবহার ও প্রয়োজনীতা সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে তুলে ধরা। এই ডিভাইসটির জনপ্রিয়তার ওপর আগামী দিনের এআর প্ল্যাটফরমের প্রসার পুরোটাই নির্ভর করছে।
হেডসেটটিতে থাকছে দুটি ক্যামেরা, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর চারপাশের দুনিয়া ধারণ করে তার ওপর ভার্চুয়াল কনটেন্ট বসাবে নতুন স্ন্যাপড্রাগন এক্সআর ২ জেন ১ প্রসেসর। নতুন প্রসেসরটি ৪কে+ রেজল্যুশনে গ্রাফিকস রেন্ডার করতে সক্ষম, কোয়েস্ট ২ যেখানে ১০৮০পি+ ফুল এইচডিতে সীমাবদ্ধ ছিল।
৪৯৯ ডলার থেকে শুরু মেটা হেডসেটটি প্রি-অর্ডার করা যাবে এখনই।
মেটা স্মার্ট গ্লাসেস
স্মার্ট গ্লাসেস ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডের বদলে চশমাকে হেডস-আপ ডিসপ্লে বানানোর ওপরই জোর দিচ্ছে রে-ব্যান। সাধারণ চশমার মতোই চশমাটি পরা যাবে, আবার এর মধ্যে থাকা ক্যামেরা দিয়ে তোলা যাবে ছবি, করা যাবে লাইভস্ট্রিমও।
বেশ কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য চশমার মধ্যে দেখাও যাবে। গান শোনা এবং মেটা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারের জন্য স্পিকার ও মাইক্রোফোনও দেওয়া হয়েছে। দাম শুরু ২৯৯ ডলার থেকে, চলছে প্রি-অর্ডারও।
থ্রিডি অ্যাভাটারভিত্তিক চ্যাটবট
হার্ডওয়্যারের পাশাপাশি মেটা তাদের নতুন লামা২ প্রযুক্তিতে তৈরি চ্যাটবট সিস্টেম উন্মোচন করেছে। জাকারবার্গ বলেছেন, পুরোপুরি এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি ভার্চুয়াল থ্রিডি অ্যাভাটারভিত্তিক চ্যাটবটই ভবিষ্যতের কাস্টমার কেয়ার, রিসেপশনিস্ট এবং কম্পানির ওয়েবসাইটে মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবে।
সেটার ডেমো হিসেবে তারা ২৮টি সেলিব্রিটির সঙ্গে চুক্তি করে তাদের প্রতিকৃতি ও কণ্ঠ ব্যবহার করে তৈরি করেছে চ্যাটবট। সেগুলো মেটার সব প্ল্যাটফরমের সঙ্গেই কাজ করতে পারবে। এসব এআই বট যাদের আদলে তৈরি, তাদের কর্মক্ষেত্রের জ্ঞান সেগুলোকে দেওয়া হয়েছে। যদিও বিষয়টিকে হলিউডে চলমান কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া সবাই বলছেন, এআইয়ের মাধ্যমে আরো চাকরিক্ষেত্র নষ্ট করার অপচেষ্টারই নজির এই ডেমোনস্ট্রেশন। চ্যাটবটগুলো সরাসরি কথা বুঝতে পারে এবং দিতে পারে উত্তর। প্রতিটি বটের মধ্যে ব্যক্তিত্বের তফাতও সুস্পষ্ট বোঝা গেছে। ভবিষ্যতে ভিডিও কলে যার সঙ্গে কথা হবে, তিনি কি মানুষ নাকি বট, সেটা বুঝতে বেগ পেতে হবে সেটা পরিষ্কার। আর লামা২ প্রযুক্তি যে ওপেনএআইয়ের জিপিটি৪-এর চেয়ে পিছিয়ে নেই, সেটাও প্রমাণ করেছে মেটা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।