বিনোদন ডেস্ক : অবাক হয়ে যাচ্ছি, লোকে এতে রুষ্ট হচ্ছে দেখে। একটা মানুষ একটা মানুষকে চুমু খাচ্ছে। একজন পুরুষ হয়তো কোনও মহিলাকে চুমু খাচ্ছেন। কিংবা একজন মহিলা একজন পুরুষকে। একজন পুরুষ আর একজন পুরুষকে কিংবা এক নারী অন্য নারীকেও এ ভাবে চুমু খেতে পারেন। এর চেয়ে মধুর, এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে এই হানাহানির জগতে?
কলকাতার মেট্রো স্টেশনে এক চুমুতেই তোলপাড়! কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের ভাইরাল এই ভিডিও নিয়ে কথা বলছেন বিশিষ্টজনরা। চুমু নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়েছে। অনেকেই বলছেন ভালোবাসা বা অনুভূতির বহিঃপ্রকাশে সমস্যা কোথায়?।
এবার কলকাতার অন্যতম গায়ক কবীর সুমন ‘চুমু’ নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। মেট্রোর চুমু নিয়ে এত হইচইয়ের জেরে ব্রেখটের কবিতা মনে পড়েছে ৭৬ বছরের এই শিল্পীর।
কবীর সুমন লিখেছেন-
অবাক হয়ে যাচ্ছি, লোকে এতে রুষ্ট হচ্ছে দেখে। একটা মানুষ একটা মানুষকে চুমু খাচ্ছে। একজন পুরুষ হয়তো কোনও মহিলাকে চুমু খাচ্ছেন। কিংবা একজন মহিলা একজন পুরুষকে। একজন পুরুষ আর একজন পুরুষকে কিংবা এক নারী অন্য নারীকেও এ ভাবে চুমু খেতে পারেন। এর চেয়ে মধুর, এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে এই হানাহানির জগতে?
আমার না হয় ৭৬ চলছে। আগামী মার্চে ৭৭-এ পা দেব। আমি তো বুড়ো মানুষ হয়ে গিয়েছি, সেই ভাবে দেখতে গেলে। তার পরেও এ সব দেখে ভেবেছিলাম, বান্ধবীদের বলব, চলো তো আমরা চুমু খাই। দেখি তো কী হয়! তাঁরা হয়তো রাজিও হবেন। কিন্তু আড়ালে। তার ন্যায্য কারণ আছে। ওঁদের যুক্তি, “তোমায় প্রকাশ্যে চুমু খেলে খবরের কাগজে নাম বেরিয়ে যাবে! অন্য কাউকে হলে হত।” আমার একাধিক বান্ধবী। কেউ হয়তো কারও বোন, বৌ-ও হতে পারেন। তাই ওঁদের যুক্তি মানা যায়। কিন্তু যাঁরা চুমু খেলেন, তাঁরা তো সেটা নন। ওঁরা তো চমৎকার একটা জিনিস করলেন। আমি ওঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও যাঁরা এটা করেছেন তাঁরা তো আর আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব এই ভেবে চুমু খাননি। তাঁদের উদ্দেশে বলব, সারা জীবন যেন ওঁরা এ ভাবে চুমু খেয়ে যেতে পারেন।
আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। তার মধ্যে একটি, এ ভাবে প্রকাশ্যে ভালোবাসা প্রদর্শন কি কোনও ভাবে ‘লোকদেখানো’?
শীতে যে কারণে বাড়ে ফ্যাটি লিভার, সুস্থ থাকার উপায় কী তাও জানুন
জোর গলায় বলেছি, একেবারেই না। লোকদেখানো মনে হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলি, হিন্দুদের বিয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ‘লাজাঞ্জলি’। সেখানে আগুনে খই ফেলার সময় স্বামী কী সুন্দর পিছন থেকে তাঁর নববধূকে জড়িয়ে ধরেন। এখানেও তো দুটো শরীর পরস্পরের স্পর্শ পায়। আহা, কী দৃশ্য! সেটাও তো প্রকাশ্যে হচ্ছে। তাতে কোনও আপত্তি উঠছে না তো? আবার খ্রিস্টানদের বিয়ের পর পুরোহিত নির্দেশ দেন, এ বার বর-বৌকে চুমু খেতে পারেন। তাতেও কারও সমস্যা নেই। ধরুন, আমিই কাউকে ভালোবাসছি। তিনি ৭৬-ও হতে পারেন কিংবা ৮০। না হওয়ার কোনও কারণ নেই। ওই মুহূর্তে আমরা তো পৃথিবীতে একা! কী আসে যায়? ওই মুহূর্তে যদি বজ্রপাতেও আমাদের মৃত্যু হয়, তাতেই বা কী এসে যায়? বরং হানাহানির যুগে এটা তো বাঁচার, ভালোবাসার শক্তিশালী নিশান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।