জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর যানজট ও জনভোগান্তি কমাতে জনসাধারণের মাঝে আশার আলো হিসেবে এসেছিলে মেট্রোরেল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একের পর এক গণবিরোধী পদক্ষেপ ক্ষুব্ধ করে তুলছে যাত্রীদের।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ১৬ স্টেশনের সবগুলোই তৈরি হয়েছে বিদ্যমান সড়কের ওপর। মেট্রোর মূল উড়ালপথ একটি পিয়ারের ওপর নির্মাণ হলেও স্টেশনগুলোয় ব্যবহার করা হয়েছে তিনটি। পিয়ারগুলো একটি আবার রাস্তার মাঝখানে। ফুটপাত ঘেঁষে রাখা হয়েছে দুটি করে। তা ছাড়া স্টেশনে প্রবেশ ও বের হওয়ার সিঁড়ি ফুটপাতে; স্টেশনের নিচে সৃষ্ট অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ; কোনো ফিডার রোডের ব্যবস্থা না থাকা মেট্রো যাত্রী ও সাধারণ জনগণেরও ভোগান্তির মাধ্যম। এত কিছুর পর মেট্রো স্টেশনের যাত্রীরা যে তাদের প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ড নিশ্চিন্তে করবে, সে ব্যবস্থাতেও থাবা বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টয়লেট দিয়েছে ইজারায়।
মেট্রোরেলে দেশের কর-জিডিপির অতিরিক্ত ভাড়া নির্ধারণে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল যাত্রীদের। এখন টয়লেট ইজারা দেওয়াতেও তাদের ক্ষোভ জন্মেছে। কেননা, টয়লেটে ঢোকার জন্য যাত্রীদের কাটতে হবে টিকিট, যার মূল্য ১০ টাকা করে। এ ইজারা নিয়েছে বৈশাখী সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও, মিরপুর-১০ স্টেশনসহ একাধিক স্টেশন ঘুরে দেখা যায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ নতুন ইজারাদারের মাধ্যমে টয়লেট ব্যবহারের জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ করে নিচ্ছে। ইজারাদারের এক প্রতিনিধি জানান, মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে টয়লেটের দায়িত্ব দেওয়ায় সেটি রক্ষণাবেক্ষণের খরচ হিসেবে যাত্রী প্রতি ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যবস্থার কারণে প্রকাশ্য ক্ষোভ দেখা গেছে যাত্রীদের মধ্যে। মিরপুর-১০ স্টেশনে টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে ‘টিকিট বাধায়’ পড়েন আশিক কুণ্ডু নামে এক যাত্রী। সাংবাদিক এসেছে শুনে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে আসেন ক্ষোভ জানাতে। আশিক বলেন, মেট্রোরেলে এমনিতেই অনেক ভাড়া নিচ্ছে। অথচ যাত্রীদের ওয়াশরুম ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা তারা করছে না। এটা দুঃখজনক ঘটনা, কর্তৃপক্ষের মুনাফা প্রবণতা বেশি; সেবা দেওয়ার চিন্তা তাদের মধ্যে কম।
জসিম হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, এটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার। দেশ আধুনিক হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে কিন্তু কর্তৃপক্ষের মানসিকতা উন্নত হচ্ছে না।
ইজারার মাধ্যমে টয়লেট থেকে জনপ্রতি ১০ টাকা করে আদায় ‘অনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। তিনি বলেন, এমনিতেই মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি ধার্য করেছে। তার ওপর টয়লেট ব্যবহারের জন্য ১০ টাকা নিচ্ছে ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে, এটা অনৈতিক। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের নিজেরাই এটা ব্যবস্থাপনা করলে যাত্রী ও কর্তৃপক্ষ উভয়ের জন্যই কল্যাণকর।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, কর-জিডিপি তুলনায় এমনিতেই মেট্রোরেলের ভাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। মেট্রোরেল চলাচল সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা না থাকায় যাত্রী বিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা। তাদেরকে এসব সিদ্ধান্ত থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে মেট্রোরেল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ন সিদ্দিককে একাধিকবার ফোন করে এই প্রতিবেদক। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সূত্র : বাংলানিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।