আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা মহামারী সহ নানা সময়ে অন্যায় অবিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে মেক্সিকোর যৌনকর্মীদের। তাদের অন্যায়-অবিচারের কথা সাধারণ গণমাধ্যমে না আসায় নিজেরাই হাতে কলম তুলে নিয়েছেন।
মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে অনেক নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর হোটেলগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তাদেরকে সেখান থেকে যখন রাস্তায় বের করে দেয়া ফেলা হল, তখন সাধারণ মিডিয়া সে খবর দেখাল না। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজেদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়-অবিচারের কথা নিজেরাই লিখবেন।
তাদের মতে, সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্যই তো এটা হওয়া উচিত। পালোমা পাজ তাদের একজন। ২৮ বছর বয়সী এই ট্রান্সজেন্ডার নারী বললেন, সাংবাদিকতা হল, একটা মাধ্যম যেখানে সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা যায়, কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, জানানো যায় আমাদের সাথে কি ঘটছে। পাজ এবং আরও ১০ জন নারী একটি মাসিক পত্রিকায় লেখেন, যার নাম নোটিসাইয়ে। এটি বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যায়। এটা প্রকাশ করে একটি বেসরকারি সংস্থা স্ট্রিট ব্রিগেড।
এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা এলভিরা মাদ্রিদ জানালেন মূল ধারার গণমাধ্যমে যৌনকর্মীদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়। এ কারণেই আমরা এই পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত নিলাম, যেটাতে যৌনকর্মীরা যৌনকর্মীদের কথা বলবে। প্রতি মাসে পত্রিকার এক হাজার কপি ম্যাগাজিনের সদস্যরা প্রতি মাসে মেক্সিকো সিটির সব যৌনকর্মীদের হাতে হাতে পত্রিকা পৌঁছে দেন। পাজ বলেন, এটা হল কমিউনিটি জার্নালিজম। আমরা প্রতিদিন যা দেখছি সেটাই তুলে আনছি পত্রিকার পাতায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যৌনকর্মী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানালেন, এটা আমাদের জানতে সাহায্য করছে বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে কি ঘটছে। জুনের সংস্করণে পত্রিকায় উঠে এসেছে করোনা মহামারীতে যৌনকর্মীরা তাদের ৭০ ভাগ উপার্জন হারিয়েছেন।
এছাড়া একজন আদিবাসী ট্রান্সজেন্ডার যৌনকর্মীকে তার পার্টনারকে খুন করার অভিযোগে ১৪ বছরের সাজার কথা উঠে এসেছে পত্রিকায়। সেই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে ওই খুনের মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। পাজ এবং তার সহকর্মীরা প্রায়ই সাংবাদিকতা বিষয়ক নানা কর্মশালায় অংশ নেন নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে।
আর এক যৌনকর্মী কৃষ্ণা সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি বইয়ের সহ-সম্পাদনা করছেন। ওই বইতে সেসব যৌনকর্মীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে যারা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।