সাইফুল ইসলাম : দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্যাশিয়ার উজ্জল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। ফলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেন কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। ২০১৭ সালে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যোগদান করেন উজ্জ্বল বড়ুয়া। এ সময় তিনি বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের ক্যাশিয়ার উজ্জল বড়ুয়া ২০১৭ সালে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক উজ্জ¦ল বড়ুয়া ছিলেন বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক। এই পদ ব্যবহার করেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন তিনি। ফলে একজন অফিস সহকারী হয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান তিনি।
লিখিত আবেদনে আরও বলা হয়, কক্সবাজার জেলায় কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ইট, বালি ও সিমেন্ট সাপ্লায়ার হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবরেটরী টেষ্টে পাঠালে সরকারি হিসাবের চাইতে অধিক টাকা দাবী করতেন উজ্জল বড়ুয়া। দাবীকৃত টাকা না দিলে করতেন না ল্যাবরেটরী টেষ্ট। এছাড়াও টেষ্টে পাঠানো মালামাল ফেরত আসার পর ঠিকাদারদের বুঝিয়ে না দিয়ে সেগুলো তিনি নিয়ে নিতেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়ার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন উজ্জল বড়ুয়া। তার পদোন্নতিতে সুপারিশ করেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন। বিপ্লব বড়ুয়া ও হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে এবং সেই সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি অফিস সহকারী থেকে ক্যাশিয়ার পদে পদোন্নতি হয় তার। উজ্জল বড়ুয়ার দাপটে সাধারণ ঠিকাদার থেকে শুরু করে নির্বাহী প্রকৌশলী পর্যন্ত কেউ তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস পেত না। হেলাল উদ্দিন সহ আওয়ামীলীগ ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষমতাশালী নেতার মাধ্যমে কক্সবাজারে দুর্নীতি পাহাড় গড়ে তুলেন উজ্জল বড়ুয়া।
উজ্জল বড়ুয়া চাকরীতে প্রবেশের জন্য ঘুষ দিতে গিয়ে পূর্বে চাকরীতে কর্মরত থাকা “কালব” এনজিও’র নয় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে ওই এনজিও তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন।
উজ্জল বড়ুয়া ২০১৭ সালে চাকুরিতে যোগদানের আগে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করলেও বর্তমানে তিনি বিলাসবহুল দ্বী-তল বিশিষ্ট ভবনের মালিক। এছাড়া তিনটি ট্রাক, একটি সিনজি, দুইটি দোকানসহ নামে-বেনামে বিপুল অর্থ বিত্ত গড়েছেন উজ্জল।
বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হওয়ার পর উজ্জল বড়ুয়া তার বোন ও আত্মীয় স্বজনদেরকে মারধর করেন। মারধরের ঘটনায় উজ্জলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।
উজ্জল বড়ুয়ার এসব অপকর্মের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাধারণ জনগণ। তদন্ত করে তার এসব দুর্নীতির বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তারা।
এ বিষয়ে উজ্জল বড়ুয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।