রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আইএসপিআর। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে দগ্ধ ৭০ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই বিমানটি চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের যুদ্ধবিমান। প্রস্তুতকারক চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে এই সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক মডেলের যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর চীন এই সিরিজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশে এই মডেলের বিমানের তৃতীয় দুর্ঘটনা এটি। এর আগে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন।
এরও আগে, ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। দুর্ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন।
আরও জানা গেছে, এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানের ককপিটে একজন পাইলট বসতে পারেন। ককপিট সম্পূর্ণ কাচের তৈরি। এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানে রয়েছে, কেএলজে-৬ এফ রাডার। যুদ্ধবিমানটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৭,৪২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে পারে।
লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানের গতি মাক ২.২ (শব্দের গতির অন্তত ২.২ গুণ)। এতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ডপয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমান ১,৫০০ কেজির মতো ওজন বহন করতে পারে।
বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ রাশিয়ার বিগ-২১ এবং অন্যান্য সমসাময়িক অনেক যুদ্ধবিমানের চেয়ে এটি দ্রুত দিক পরিবর্তনে সক্ষম। এর ওড়ার পাল্লা কমবেশি ১,৪০০ কিলোমিটার।
এফ-৭ বিজিআই বাংলাদেশের জন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান এফ-৭ বিজি-এর উন্নত রূপ, যার মূল ভার্সন জে-৭ জি।
এফ-৭ বিজি-এর তুলনায় এফ-৭ বিজিআই-এর বেশকিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এফ-৭ বিজিআইতে তিনটি মাল্টি ফাংশনাল ডিসপ্লে এবং আরও শক্তিশালী ফায়ার কন্ট্রোল রাডার যুক্ত করা হয়েছে। ২০১১ সালে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ১৬টি যুদ্ধবিমান সরবরাহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সালে এই যুদ্ধবিমানগুলোর সরবরাহ সম্পন্ন হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।