লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাংলার গ্রামাঞ্চলে হাঁটলে ধানক্ষেত, রাস্তার পাশ কিংবা পতিত জমিতে চোখে পড়ে একটি বিশেষ গাছ, যার পাতা ছুঁলে তা সঙ্গে সঙ্গে মুছে যায়। এটি লজ্জাবতী গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Mimosa pudica)—লোকজ সমাজে একে ‘লজ্জা লতা’ বা ‘ছুঁইনাছুঁই’ নামেও ডাকা হয়।
লজ্জাবতী একটি গুল্মজাতীয় লতানো উদ্ভিদ, যার পাতা স্পর্শে সঙ্কুচিত হয়। উচ্চতায় এটি গড়ে ৩০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয় এবং গোলাপি বা বেগুনি রঙের তুলার মতো গোল ফুল ফোটায়। এটি বাংলাদেশসহ ট্রপিক্যাল ও সাবট্রপিক্যাল অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে জন্মে।
লজ্জাবতী গাছের গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ গুণ
এই গাছটি বহু প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিচে এর কিছু উল্লেখযোগ্য ভেষজ গুণ তুলে ধরা হলো:
ক্ষত নিরাময়ে: কাটা বা ছেঁড়ার পর লজ্জাবতীর পাতা বেটে লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয় এবং দ্রুত নিরাময় হয়।
জ্বর কমাতে: শুকনো শিকড় গুঁড়া করে সিদ্ধ পানি দিয়ে খেলে ভাইরাল জ্বর, টাইফয়েডে উপকার পাওয়া যায়।
অর্শ্বরোগে: পাতা ও মূল বাটা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পাইলস উপশম হয়।
রোগ প্রতিরোধে সহায়ক: এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে।
নারীস্বাস্থ্যে উপকারী: ঋতুচক্রের অনিয়ম, সাদা স্রাব ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয়।
বিষক্রিয়া প্রতিরোধে: লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, সাপ বা বিষাক্ত পোকার কামড়ে পাতার প্রলেপ দিলে বিষক্রিয়া কমে।
তামিলনাড়ু, আসাম ও বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এখনো আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা লজ্জাবতী গাছকে সাপের বিষ প্রতিরোধে সহায়ক মনে করেন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। ফলে এটি প্রচলিত চিকিৎসার বিকল্প নয়।
ব্যবহারের সতর্কতা
লজ্জাবতী গাছের যেকোনো ব্যবহার অবশ্যই প্রশিক্ষিত আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত। অতিমাত্রায় ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন—অতিরিক্ত ঘুম, হজমের সমস্যা বা স্নায়বিক প্রভাব দেখা দিতে পারে।
নীল সিনেমায় অভিনয় করতে হলে যে বিশেষ ধরনের দক্ষতা থাকতে হয়, জানালেন সানি
এই লতা শুধু নামেই লাজুক নয়, বরং একটি সম্ভাবনাময় ঔষধি সম্পদ। গ্রামীণ অভিজ্ঞতায় গড়ে ওঠা এই উদ্ভিদের যথাযথ বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও আধুনিক চিকিৎসার সহায়তায় ব্যবহার নিশ্চিত করাই এখন সময়ের চাহিদা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।