জুমবাংলা ডেস্ক : ক্লাসে শিক্ষক যা পড়ান, তা হুবহু খাতায় টুকে ফেললেই কি পড়া মনে রাখা যায়? অনেকেই কিন্তু এভাবে পড়া মনে রাখতে পারেন না। আজ আমরা আলোচনা করব পড়াশোনা করার একটি বিশেষ পদ্ধতি, মাইন্ড ম্যাপিং নিয়ে।
আমরা কিছু লাইন পড়ে একটা বিষয় নিতে যতটা না বলতে পারব, তার চেয়ে বেশি বলতে পারব কোনো ছবি দেখে। খেয়াল করে দেখবেন, প্রেজেন্টেশনের স্লাইডে কিন্তু আমরা লেখা কম, ছবি, গ্রাফ বা চার্ট বেশি ব্যবহার করি। এর কারণ একটা ছবি দেখলেই চট করে আমাদের মাথায় সেই বিষয়-সংক্রান্ত অনেক কিছু চলে আসে। আর এভাবেই কোনো তথ্য ভিজ্যুয়ালি মনে রাখার পদ্ধতিকে মাইন্ড ম্যাপিং বলে।
মাইন্ড ম্যাপের সুবিধা
■ মাইন্ড ম্যাপ সৃজনশীল চিন্তন দক্ষতা বাড়াতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কারণ এখানে আপনাকে কোনো একটা জিনিস দেখে পুরো বিষয়টা মনে রাখতে হবে।
■ কোনো কিছু দ্রুত মনে করতে এবং বেশি দিন পড়া মাথায় রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস একটা টেবিলের মাধ্যমে মনে রাখতে চান, তাহলে মাইন্ড ম্যাপিং পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তাহলে সেই টেবিলের ছবি কখনোই মাথা থেকে মুছে যাবে না।
■ কোনো অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্টের আগে মাইন্ড ম্যাপ করে নিলে কাজ বেশ সহজ হয়ে যায়।
■ মাইন্ড ম্যাপিং যে কারও চিন্তন দক্ষতা এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতাকে শাণিত করে।
যেভাবে মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করবেন
■ প্রথমেই নোট খাতাটা খুলুন। এরপর একদম ওপরে, মাঝের দিকে অধ্যায়ের নাম লিখুন। এরপর ঠিক করুন কোন বিষয়ের মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করতে চান। ধরা যাক পদার্থবিজ্ঞানের আলো অধ্যায়টি পড়তে চাইছেন। এবার প্রতিটি মূল শব্দের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কালি নির্বাচন করুন। যেমন কোন লেন্সের ক্ষেত্রে আলো কীভাবে যায়, তা ভিন্ন কালির কলম দিয়ে লিখুন। এতে করে একবার দেখলেই আলাদা করা যাবে।
■ এরপর মূল শব্দগুলো একটা শাখার মধ্যে লিখুন। ভিন্ন ভিন্ন কালি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে দেখতে ভালো লাগবে।
■ এই শাখাগুলোর উপশাখা, অর্থাৎ এই বিষয়ের মধ্যে আরও কী কী বিষয় আছে তা আঁকুন। ডায়াগ্রাম বা ছবিও ব্যবহার করতে পারেন।
■ যেহেতু আলো অধ্যায়টির ওপর মাইন্ড ম্যাপ বানাবেন, এবার সেখানে কী কী বিষয় আছে তা খাতায় নোট করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রথম দিকে রাখবেন।
■ গুরুত্বপূর্ণ শব্দ, সূত্র, কোনো কিছুর মান—এগুলো নোট করুন। এই শব্দগুলো একবার দেখলেই পুরো লাইন মাথায় চলে আসবে।
■ ভিন্ন ভিন্ন কালি ব্যবহার করার সুবিধা হলো আপনি একবার দেখলেই বুঝে যাবেন যে কোন বিষয়ের সঙ্গে কোন শব্দটি সম্পর্কিত। তা ছাড়া তথ্য খুঁজে বের করতেও সহজ হবে।
■ আরও ভালোভাবে পড়া মনে রাখতে চাইলে ছবিও
ব্যবহার করতে পারেন।
মাইন্ড ম্যাপ তৈরির আগে
■ কখনোই কোনো শাখাতে পূর্ণ বাক্য ব্যবহার করবেন না।
■ যত বেশি ডায়াগ্রাম ব্যবহার করা যায়, ব্যবহার করুন।
■ কোনো শাখা বা উপশাখা নামকরণের সময় ২ থেকে ৪টির বেশি শব্দ ব্যবহার করবেন না।
■ কেবল মূল পয়েন্টগুলো লিখুন।
■ এটা এমনভাবে তৈরি করুন, যাতে দেখতে সুন্দর লাগে।
মাইন্ড ম্যাপিং টুলস
যদিও মাইন্ড ম্যাপিং খাতা-কলমে করা উচিত, তবে ডিজিটালিও করা যায়।
■ মিরো: আপনি বিনা মূল্যে একসঙ্গে অনেকে মিলে মিরো ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে শ খানেক ফ্রি টেমপ্লেটও রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করতে পারবেন। এমনকি নিজের দলের মানুষদের সঙ্গে সেটা শেয়ার করতে পারবেন, একসঙ্গে এডিটও করতে পারবেন।
■ মাইন্ড ভেক্টর: এটা আপনাকে রঙিন মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করতে সাহায্য করবে। তবে আনলিমিটেড মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করতে চাইলে ১০ ডলার গুনতে হবে।
এগুলো ছাড়াও প্লে-স্টোর এবং অ্যাপল স্টোরে আরও মাইন্ড ম্যাপিং টুল পাওয়া যাবে।
গ্রন্থনা: মুসাররাত আবির
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।