জুমবাংলা ডেস্ক : উদ্যমী ও তরুণদের আয়বর্ধন কাজে নিয়োজিত করতে নতুন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো দেশব্যাপী উদ্যোক্তা তৈরি করা। আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা। এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে সাড়ে সাত হাজার উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও অনান্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এসব উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।
জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) এর একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। টিস্যুকালচার ল্যাবরেটরি ও হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গতকাল মঙ্গলবার নতুন বছরের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতি ব্যাচে প্রায় ৫০ জনের হাতে কমলে আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
তিনদিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ শেষে তাদের বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা দেওয়া হয়। এর আগে কয়েকটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তেমনি একজন সাতক্ষীরার নুসরাত নওরীন অর্পা। তিনি প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর দেশব্যাপী একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফল ও সবজি বিক্রি করতে পারছেন। সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারার কারণে তিনি বেশ লাভবান হচ্ছেন। সামনের দিনে আরও বিক্রি বাড়িয়ে পরিবারে বেশ সচ্ছলতা আনতে চান তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই আমাদের কৃষকের সন্তানেরা কৃষি কাজে থাকছে না। ফলে দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। শ্রমিক সংকট তীব্র হচ্ছে। এছাড়া বিপণন জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আবার দক্ষতার অভাবে কৃষি লাভজনক করা সম্ভব হচ্ছে না। পেমা হিসেবে কৃষি আবার সম্মানজনক জায়গা পাচ্ছে না। ফলে মানুষের আগ্রহ হারাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিক ও সম্মানজনক পেমায় পরিণত করা সম্ভব বলে জানান টিস্যুকালচার ল্যাবরেটরি ও হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক তালহা জুবাইর মাসরুর।
তিনি বলেন, আমাদের এই প্রশিক্ষণ অন্য প্রশিক্ষণ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখান থেকে প্রশিক্ষণ প্রায় সকলের উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। কৃষিকে একটি আধুনিক ও লাভজনক পেশা হিসেবে গড়ে তুলতে পারছেন। আমরা কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য ফসলের মাঠে হাতেকলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। যার মাধ্যমে স্নো ফ্লেক্স মডেলে আগামী চার বছরে প্রায় ৫০ হাজার দক্ষ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হবে।
প্রশিক্ষণ নেওয়া উদ্যোক্তা বলছেন, এ প্রশিক্ষণে উত্তম কৃষি চর্চা, মূল্য সংযোজন, সাপ্লাই চেইন, মৌসি ফসল উৎপাদন কৌশল, রপ্তানি নির্ভর কৃষি উৎপাদন ও বাজার তৈরি, যোগাযোগ ও নেতৃত্ব দক্ষতা তৈরি ও অনলাইন মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়ে জোর দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ ছাড়াও উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। ‘কৃষি বায়োস্কোপ’ নামের সে প্ল্যাটফর্মে সদস্য প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। মোট ৩৫৫টি ভিডিও ৯ কোটি বারের বেশি দেখা হয়েছে। এসব দেখে উদ্যোক্তারা বাণিজ্যিক কৃষিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।
এ বিষয়ে কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কৃষিতে তরুণদের অগ্রহী করতে তাদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।