সাইবেরিয়াতে অবস্থিত মির মাইন একসময় বিশ্বের সব থেকে বড় হীরার খনি ছিল। তবে, বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় গভীর হীরা খনি এটি। এখান থেকে ১ কোটি ক্যারেট হীরে প্রতি বছর উত্তোলন করা হতো। হীরে শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত এক গর্তে পরিণত হয় স্থানটি। গর্তটি যে দেখতে অদ্ভুত তাই নয়, এর আচরণও অদ্ভুত। এর উপর দিয়ে কোনো হেলিকপ্টার উড়ে গেলে আশ্চর্যজনকভাবে নিচের দিকে টান অনুভূত হয়। মনে হয়, প্রচণ্ড শক্তিতে কেউ হেলিকপ্টারটি টেনে ধরছে।
মির মাইনের গভীরতা ১৭২২ ফুট, চওড়া প্রায় ৩৯০০ ফুট। এটির ব্যাসরেখার দৈর্ঘ্য ১.২ কি.মি.। এই পর্যন্ত হীরা শিল্পে মির খনির গুরুত্ব অপরিসীম। খনিটি আবিষ্কার হয় ১৯৫৫ সালে। ২০০১ সালে খনিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি বছর এখান থেকে ১০ মিলিয়ন ক্যারেট হীরা উত্তোলন সম্ভব হয়েছে। তবে ২০০৯ সালে আবারও সিদ্ধান্ত হয় খনিতে খনন চলবে। এখনো হীরা মজুদ রয়েছে ৯৭.৪ মিলিয়ন ক্যারেট। পুনরায় খনন শুরু হলে সেখানে উত্তোলনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২.২ মিলিয়ন ক্যারেট উত্তোলন হয়। পরবর্তী লক্ষ্য প্রতি বছরে ৪ মিলিয়ন ক্যারেট হীরা উত্তোলনের।
সুরক্ষার কারণে বর্তমানে মির মাইনের ওপর নো ফ্লাইং জোন ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ, মির মাইনের গর্তের ওপর দিয়ে যখন হেলিকপ্টার যায় তখন হেলিকপ্টারকে কোনো শক্তি নিচের দিকে টেনে ধরে। ফলে দুর্ঘটনার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মির মাইন খুব গভীর হওয়ার কারণে খনির নিচের বায়ু ভূ-অভ্যন্তরের উষ্ণতার কারণে গরম হয়ে হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে আসে। আর এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য ওপরের বায়ু নিচে নেমে যায়। বায়ুর এই ওঠা নামার কারণে খনির ওপরে ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়। তাই ওই স্থানের ওপরে গেলে হেলিকপ্টার খানিকটা নেমে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।