জুমবাংলা ডেস্ক: বিএনপি নির্বাচনে যাবে- এমন পূর্বানুমান করায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দলটির দায়িত্ব নিয়ে নিতে বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১০ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে এ কথা বলেন তিনি।
কাদেরের বক্তব্য উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি কীভাবে অন্য একটি দলের বক্তব্য নিজে দেন?
‘আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বর্তমানে হাসিনার অবৈধ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। এর মধ্যে ফাঁকফোকর বা কোনো কিন্তু নেই। এ সরকারকে যেতে হবে। ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের সুযোগ ও পরিবেশ তৈরি হবে।’
২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়ার পর দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর দুটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই হয়।
এর মধ্যে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে তা বানচালের জন্য সহিংস আন্দোলন করে ব্যর্থ হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০১৮ সালে পরের নির্বাচনে তারা ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে আরও একটি জোট করে ভোটে আসে। কিন্তু সেই নির্বাচনে ১০টিরও কম আসন পায় দুই জোট।
এই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে- এমন অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। তারা আবার নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। ঘোষণা দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে বিএনপি আসবে। অস্তিত্বের জন্যই তাদের আসতে হবে। আমরাও একটি শক্তিশালী বিরোধী দলকে সংসদে স্বাগত জানাই। বিরোধী দলের স্ট্যান্ড থাকুক।’
নির্বাচন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকলে ভোট নিরপেক্ষ হবে। মির্জা ফখরুলের দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’
ফখরুল কথা বলেন ইভিএম নিয়েও। ৩০০ আসনেই এই যন্ত্রের মাধ্যমে ভোট নেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় বৈঠকে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের জবাব তো নির্বাচন কমিশন দিয়েছে। আমার আর কোনো কথা বলতে হবে বলে মনে হয় না।
‘এই সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে পুরোপুরি জড়িত আছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এটাই তার বড় প্রমাণ। প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলেন, ৩০০ আসনে ইভিএম দিয়ে নির্বাচন হবে। এই দায়িত্ব তো পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের। এটা দিয়ে প্রমাণিত হয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা অর্থাৎ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হচ্ছে।’
বিএনপির দাবি আদায়ে ‘আন্দোলন দেখিয়ে দেয়ার’ বিষয়ে দলটির নেতারা যে বক্তব্য রেখেছেন, সে বিষয়েও ফখরুলকে প্রশ্ন রাখেন গণমাধ্যমকর্মীরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি আয়োজন আন্দোলনের অংশ। এই যে আমরা সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচি দিয়েছি, শাহাদাতবার্ষিকীও আন্দোলনের অংশ। আপনারা এত অস্থির হবেন না। আপনারা যেটা দেখতে চান, তা খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন।
‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে টানা আন্দোলন চলছে। আমরা দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনের মধ্যেই আছি।’
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর সে দেশের সরকারের পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া এবং পরবর্তী ঘটনা নিয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘এই সরকার কোনোদিনও শিক্ষা নেবে না। যদি নিত তাহলে গত ১০ বছরে শিখত। শ্রীলঙ্কা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, এই সরকার বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
যেসব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আ.লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।