বিনোদন ডেস্ক : ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে গোটা শোবিজ অঙ্গনে। সহশিল্পীর এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারকারা। তাদেরই একজন অভিনেতা সিদ্দিক। হিমুর মৃত্যুতে অভিনেত্রীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি।
সিদ্দিক ও হিমু একসঙ্গে পর্দায় কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। তাই হিমুকে বেশ কাছ থেকে দেখেছেন এই অভিনেতা। সহশিল্পীর মৃত্যুর খবরে তাকে নিয়ে ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। যেখানে উল্লেখ করেছেন বিয়ে নিয়ে হিমুর ভাবনা।
শুক্রবার সকালে ফেসবুকে হিমুর বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে সিদ্দিক লিখেছেন, ‘মৃত্যুটা কত সহজ। এক মিনিটে নাই ভরসা, এটা কথাটা আবারও প্রমাণ করলো অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু।’
তিনি বলেন, ‘আমার অ্যালবামের ছবিগুলো সত্যিকারে ছবি হয়ে গেল। আমার মনে হয় আমার অভিনীত সবচেয়ে বেশি নাটকের নায়িকা ছিলেন হুমায়রা হিমু। শুটিংয়ে দেখা হলেই বলতো, ভাইয়া আমার মনে হয় বিয়ে হবে না কোনোদিন। বলতাম কেন রে? সবাই খালি তোমার সাথে যখন অভিনয়ে নেয়, আমাকে ঝগড়াটে চরিত্র দেয়। এইসব টেলিভিশনে দেখে সবাই ভাবে বাস্তবেও আমি বোধ হয় একটা ঝগড়াটে মেয়ে। আর এমন একটা ঝগড়াটে মেয়েকে কে বিয়ে করবে বলো?
‘আমি হাসতাম আর বলতাম আরে পাগল তোর বিয়ে হবে, সুন্দর একটা ছেলে দেখে তোকে বিয়ে দিয়ে দেবো আমরা। আমি চিত্রলেখা দিদি, ডলি ভাবি, নাদিয়া, বন্ধু রুমি, দিলু ভাই, আশিক এবং পরিচালক সোহাগ কাজী অনেক মজা করতাম ওর বিয়ের বিষয় নিয়ে বউ বিরোধ নাটকের শুটিংয়ের সময়। অনেক হাসাহাসি করতাম আমরা।’
বাবা-মাকে হারানোর পরে একা হয়ে গিয়েছিলেন হিমু, সে কথা জানিয়ে সিদ্দিক বলেন,‘বাবাকে হারিয়েছিল অনেক আগে। মা ছিল তার একমাত্র বন্ধু, জীবনের সঙ্গী। সেই মাকেও হারিয়েছে প্রায় বছর দুয়েক আগে। বড় একা ছিল সে। মা-মারা যাওয়ার পর থেকে শুটিং আসতো সবসময় লেট করে, আমরা জিজ্ঞাসা করলেই বলতো ভাইয়া একা থাকি, ঘুম থেকে উঠতে পারি না। পরিচালক এবং আমরা কিছু বলতাম না কারণ যখন অভিনয় শুরু করতো কিঞ্চিত পরিমাণে ভুল হতো না এই মেয়েটির, এক শট দ্বিতীয়বার দিতো না। পরিচালক হাসি দিয়ে বলতো ওকে হিমু আপু বা হিমু চলেন লাঞ্চ ব্রেক।’
হাহাকার প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সারাক্ষণ মেকআপের টেবিলে, চেয়ারে বসে ফাঁক পেলে ঘুমিয়ে পড়তো। ধমকের সুরে বলতাম হিমু। সে বলতে বলো আমি কি ঘুমিয়েছি নাকি? চলো একবার রিহার্সেল করে নেই। চলো। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারতেছি না হিমু সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে গিয়েছে চিরজীবনের মতো, আর তাকে দেখতে পাবো না শুটিং সেটে।
এই অভিনেতা বলেন, ‘পরিচালক আর অভিযোগ দেবে না হিমু সেটে আসে নাই সিদ্দিক ভাই। ওকে নিয়ে আর কোনো কথাই শুনতে হবে না আমাদের। তবে ফজরের নামাজের পর শুধু একটা কথাই বলতে চাই সবাইকে, হুমায়রা হিমুর জন্য দোয়া করবেন। মা-মরা এতিম মেয়েটাকে যেন আল্লাহপাক ভালো রাখেন পরকালে এবং জান্নাতুল ফেরদৌসের নসিব করেন। আল্লাহপাক সবাইকে হেফাজত করুন।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার উত্তরায় নিজ ফ্ল্যাট থেকে হিমুকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।