সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিবাদ মিমাংসার জন্য পুলিশ সুপারের নাম ভাঙিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের স্ট্যানো মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। পরে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সেই ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. রবিউল ইসলাম বিশ্বাস গত ৩ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা করে সেই ঘুষের টাকা ফেরত দেন মিজানুর রহমান।
ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দক্ষিণ পূর্ব সীমানার দেওয়ালের বাহিরে রবিউল ইসলামের নির্মানাধীন ভবনের জায়গার সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধপূর্ণ এই সীমানা নির্ধারণের জন্য পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও রবিউল ইসলামের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সকলের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমির পরিমাপ ও সীমানা নির্ধারণ করে উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে একটি খুঁটি স্থাপন করা হয়। খুটি স্থাপন করার পর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রতিনিধি স্ট্যানো মিজানুর রহমান ও তার সঙ্গীয় লোকজন রবিউল ইসলামকে জমির সীমানা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য উপযুক্ত দলিল ও কাগজপত্র নিয়ে পুলিশ সুপারের সাথে সাক্ষাৎ করার কথা বলে আসেন।
এরপর রবিউল ইসলাম পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলার জন্য স্ট্যানো মো. মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইলে কথা হলে সে রবিউলকে বলেন, আমার কাছে আসেন এসপি স্যারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, এসপি স্যারকে যা বলার আমি বলব। মিজানুর রহমানের কথামতো তার সাথে দেখা করার জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলে তিনি রবিউল ইসলামকে বলেন, আপনার এই বিল্ডিংয়ে কাজ করতে হলে ছয় লক্ষ টাকা দিতে হবে। এরপর রবিউল ইসলাম পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে চাইলে মিজানুর রহমান নানারকম ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, এসপি স্যারের কাছে যাওয়ার দরকার নেই, আপনার আমার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে যান।
পরে রবিউল ইসলাম কোন উপায়ান্তর না পেয়ে ৫ লক্ষ টাকা দিতে সম্মত হয়। তখন মিজানুর রহমান রবিউল ইসলামকে বলেন, ৫ লক্ষ টাকা আমার কাছে না দিয়ে আপনার ঠিকাদার গোপালের কাছে দিয়ে আসেন। তখন রবিউল ইসলাম মিজানুর রহমানের কথামতো ৫ লক্ষ টাকা ঠিকাদার গোপালের কাছে দিয়ে আসেন। এরপর ঠিকাদার গোপাল ৫ লক্ষ টাকা মিজানুর রহমানের কাছে পৌছে দেওয়ার দিলে মিজানুর রহমান রবিউল ইসলামকে ফোন করে বলেন, আমি টাকা পেয়েছি, আপনারা বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করে দেন। আমি এই টাকা এসপি স্যারের কাছে পৌছে দিব, আপনাদের আর কেউ কাজে বাধা দিতে পারবেনা, আপনারা নিশ্চিতে কাজ করুন। এর কিছুদিন পর অভিযুক্ত মিজানুর রহমান রফিউল ইসলামকে ফের কাজ বন্ধ রাখার কথা বললে রবিউল মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখি ঘুষ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এগুলো মিথ্যা কথা। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি, ফেরতও দিইনি।
তবে ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, এসপি অফিসে বসে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে। মিজানুর রহমান সাহেব আমার টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে। এখন আমার ভবনের কাজ চলমান আছে, আর কোন সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।