জুমবাংলা ডেস্ক : কম খরচে, কম সময়ে, সহজে, ঝামেলামুক্তভাবে প্রকৃত উপকারভোগীর কাছে উপবৃত্তি, ভাতা বা অর্থ সহায়তা পৌঁছাতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে (এমএফএস) মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এমএফএস সেবার মাধ্যমে ভাতা বিতরণ হওয়ায় উপকারভোগীরা দেশের যে কোনো প্রান্তে বসে মুহূর্তেই ভাতার টাকা তাদের মোবাইলে পেয়ে যাচ্ছেন।
সফলভাবে সরকারি সহায়তা, ভাতা, উপবৃত্তি বিতরণের এ কার্যকর পদ্ধতি সবার জন্য স্বস্তি নিয়ে এসেছে। তবে এর মধ্যেও কতিপয় অসাধু ব্যক্তি বিভিন্নভাবে ভাতাভোগীদের প্রতারিত করার চেষ্টা করেন। তবে এক্ষেত্রে গ্রাহকেরা সচেতন হলে অ্যাকাউন্ট ও প্রাপ্ত অর্থ দুটোই থাকবে নিরাপদ।
রোজা, ঈদ বা অন্য কোনো উপহার :
কোনো উৎসব বা উপলক্ষ্য ঘিরে এক শ্রেণির অসাধু চক্র ‘উপহার পাবেন’ বা ‘উপহার জিতেছেন’ প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে চেষ্টা করেন সরলমতি মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সরাসরি মোবাইলে –আপনি উপহার জিতেছেন, আপনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন বা বড় কোনো কোম্পানি থেকে ঈদ উপলক্ষে আপনাকে টাকা উপহার দেওয়া হবে, এমন অসংখ্য তথ্য দিয়ে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে ওইসব চক্র।
এমন কোনো ঘোষণা বা তথ্য দেখলে বা কোনো লিংক দেখলে তা ক্লিক করা কিংবা কোনো ধরনের তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। অনেক সময় আবার কোনো লিংকে ক্লিক করার পর নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরের মত ব্যক্তিগত তথ্য দিতে বলা হয়, নিশ্চিত না হয়ে এরকম কোনো তথ্য কাউকে দেওয়া বিপদজনক।
বাস্তবতা হলো, কোনো ধরনের উপহার বা পুরস্কার এমন গড়পড়তা নির্বাচনে বিতরণ করা হয় না। ফলে নিরাপদ থাকতে এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। এমনকি মোবাইলে ম্যাসেজ বা কল এলেও এড়িয়ে যেতে হবে।
উপবৃত্তি/সরকারি প্রণোদনা/ভাতা :
শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমাতে এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে থাকে সরকার। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষা খাতসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি ভাতাও চালু আছে।
উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর তালিকা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংগ্রহ করে উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন সময় প্রতারকচক্র ভুয়া এসএমএস বা ফোন কলের মাধ্যমে এক্ষেত্রেও প্রতারণার চেষ্টা করেন। আপনার সন্তান ডাবল উপবৃত্তি পেয়েছে/বিশেষ উপবৃত্তি পেয়েছে, উপবৃত্তির টাকা পেতে এ নম্বরে যোগাযোগ করুন- এ ধরনের তথ্য দিয়ে কৌশলে এমএফএস অ্যাকাউন্টের পিন-ওটিপি নিতে ফাঁদ পাতে এসব চক্রের সদস্যরা।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, প্রণোদনা, আর্থিক সহায়তা বা অন্য কোনো সরকারি সহায়তার ক্ষেত্রে সুবিধাভোগীর নম্বর নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। উপবৃত্তি বা অন্য যে কোনো ধরনের সহায়তা পেতে কোনো ফোনে যোগাযোগের প্রয়োজন নেই। এছাড়া উপবৃত্তি নির্ধারিত এমএফএস অ্যাকাউন্টে যাওয়ার আগেও কোনো ধরনের ম্যাসেজ যায় না।
উপবৃত্তির টাকা পেয়েছেন, এ ধরনের ম্যাসেজ পেলে নির্ধারিত অ্যাকাউন্ট চেক করে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। উপবৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে এমন ম্যাসেজের ক্ষেত্রেও কোনো ফোন নম্বর থাকে না। ফলে আপনি বা আপনার সন্তান উপবৃত্তি পেয়েছে, এমন ম্যাসেজ দেখলে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা যাবে না।
যেসব বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে :
– পিন এবং ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) এগুলো গোপন তথ্য। এগুলো শেয়ার করা যাবে না।
– অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলে দীর্ঘক্ষণ কথা না বলে ফোন কেটে দিতে হবে।
– একটি মোবাইলে ফোন করে অন্য মোবাইল নম্বর নিতে চাইলে কখনোই দেওয়া যাবে না।
– ভুল করে টাকা চলে গেছে বললে আগে নিজের অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করে নিশ্চিত হতে হবে।
– কাছের কেউ বিপদে পড়েছেন বলে সহায়তা চাইলে আগে নিজে সত্যতা যাচাই করা জরুরি।
– কাস্টমার কেয়ার থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে এমন কোন তথ্য দিলেও তা বিশ্বাস না করে বরং নিজে কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে সত্যতা যাচাই করতে হবে।
– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব পরিচিত কেউ টাকা চাইলে দেওয়ার আগে তার সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ অ্যাকউন্ট হ্যাক হয় এবং সেগুলো প্রতারণার কাজে ব্যবহার হয়।
– টাকা দ্বিগুণ হবে, অল্পদামে পণ্য পাওয়া যাবে, চাকরি পাবেন, পুরস্কার পাবেন এমন প্রলোভনেও বিশ্বাস করা যাবে না।
মনে রাখবেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট আপনার টাকার ওয়ালেট। যে কোনো ধরনের তথ্য আগে নিজে যাচাই করতে হবে। সতর্কতাই পারে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।