জুমবাংলা ডেস্ক : মোবাইল ইন্টারনেটে ৫০টির বেশি ডাটা প্যাকেজ চান না বেশিরভাগ গ্রাহক। এক্ষেত্রে ডাটার মেয়াদ ৭ থেকে ৩০ দিন এবং আনলিমিটেড- তিন ক্যাটাগরিতে হতে পারে। আর মেয়াদের মধ্যে যে কোনো প্যাকেজ নিলেই তারা অব্যবহৃত ডাটা ফেরত চান। মোবাইলে ইন্টারনেট ইস্যুতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জনমত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে বিটিআরসি বলছে, সবকিছু যাচাই বাছাই শেষে মোবাইল ইন্টারনেটের একক মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) রাজধানীর রমনায় বিটিআরসি মিলনায়তনে মোবাইল ইন্টারনেট বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।
মোবাইলে ফেসবুক ব্রাউজিং কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলতে গিয়েও ইন্টারনেটের কাঙ্ক্ষিত গতি মেলে না। কিন্তু দুর্বল নেটওয়ার্ক আর বেহিসাবি প্যাকেজের ফাঁদে গ্রাহকের পকেট ফাঁকা হচ্ছে ঠিকই।
২০২১ সালের আগ পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেটে প্যাকেজের ওপর বিটিআরসির কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। গ্রাহকদের ইচ্ছেমতো মেয়াদে ২৮৯টি ডাটা প্যাকেজ দিতেন মোবাইল অপারেটররা। এই বিশৃঙ্খলা দূর করতে ডাটা প্যাকেজ সংখ্যা কমিয়ে ৯৫টিতে নির্ধারণ করে বিটিআরসি। সেক্ষেত্রে মেয়াদ ৩, ৭, ১৫ ও ৩০ এবং আনলিমিটেড মেয়াদে নির্ধারণ করা হয়। তারপরও গ্রাহক অসন্তোষ কমেনি।
তারা বলছেন, প্যাকেজের মেয়াদ শেষে অব্যবহৃত ডাটা ব্যবহার করতে পারলে ভালো হতো। নেটওয়ার্কও দুর্বল। তাই প্যাকেজ কিনেও কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না।
২০১৪ সাল থেকে টেলিটক সিম ব্যবহার করছেন জানিয়ে আতিক হাসান নামে একজন গ্রাহক টেলিটকের আনলিমিটেড প্যাকেজের মূল্য কমানো ও দেশব্যাপী এর নেটওয়ার্ক সুবিধা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মাইনুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী নেটওয়ার্ক পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন জানিয়ে নেটওয়ার্ক সেবা আরও উন্নত করতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান।
মর্তুজা নামে একজন ফ্রিল্যান্সার বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর টেলিটকের নেটওয়ার্ক কভারেজ থাকে না। গ্রামীণফোন থেকে গ্রাহককে প্রচুর মেসেজ দেয়া হয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত মেসেজ গ্রাহকের জন্য বিরক্তিকর হয়ে যাচ্ছে। অপর এক গ্রাহক ডাটার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৭ দিন এবং ১টি ভোটার আইডির বিপরীতে ১৫টি সিম নিবন্ধনের সুযোগ কমিয়ে আনার পক্ষে মতামত দেন।
এ অবস্থায় মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে গ্রাহকদের মতামত জানতে মুক্ত জরিপ চালায় বিটিআরসি। যেখানে অংশ নেয় পাঁচ শতাধিক মানুষ। জরিপে দেখা যায়, ৫৫ শতাংশ মানুষ সর্বোচ্চ ৫০ বা তারও কম ডাটা প্যাকেজ চান। এদিকে ৫টির পরিবর্তে ৭দিন, ৩০দিন ও আনলিমিটেড ডাটা মেয়াদ চান ৫৩ শতাংশ মানুষ। ডাটা ক্যারি ফরোয়ার্ড ক্ষেত্রে, মেয়াদের মধ্যে যেকোনো প্যাকেজ কিনলেই ৮৬ শতাংশ গ্রাহক ডাটা ফেরত চান। আর প্রতি জিবি ডাটার মূল্য যেকোনো মেয়াদের ক্ষেত্রে একই দাম চান ৫২ শতাংশ মানুষ।
এদিকে মোবাইল ইন্টারনেটে প্যাকেজ, দাম ও মেয়াদের ভিন্নতা নিয়ে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন মোবাইল অপারেটররা।
এসময় রবির চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, আমাদের অনেক গ্রাহক। আর সবার চাহিদাও কিন্তু এক নয়। তাদের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন মেয়াদের ডাটা প্যাকেজ তৈরি করতে হয়েছে। যার জন্য মনে হচ্ছে যে, আমাদের প্যাকেজের সংখ্যা বেশি।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, বছর খানেক আগে ডাটা মূল্য নিয়ে বেশি আলোচনা হলেও বর্তমানে সেবার মান নিয়ে গ্রাহকরা প্রশ্ন তুলছেন বেশি। বিভিন্ন পর্যায়ে অপারেটরদের প্রচুর পরিচালন ব্যয় হওয়ায় ডাটার দাম চাইলেই কমানো সম্ভব হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ডাটার মূল্য নিয়ে তিনি জানান, ট্যাক্স ভ্যাট বাবদ খরচের পর গ্রাহক পর্যন্ত সেবা নিতে আমাদের আরও ২২ টাকা খরচ হয়। আর বাকি অর্থ দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। সুতরাং, মোবাইল ইন্টারনেট থেকে যে আমরা খুব বেশি মুনাফা করছি তা কিন্তু নয়।
আম্রপালিকে পাহাড়ে নিয়ে উদ্দাম রোমান্সে মাতলেন নিরহুয়া, একা দেখুন
এদিকে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, তাড়াহুড়োর কিছু নেই। আমরা যেমন গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন মতামত নিচ্ছি, পাশাপাশি আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গেও কথা বলেছি। সবারটা বিশ্লেষণ শেষে আমরা এরইমধ্যে একটি খসড়া বানিয়েছে। অধিকতর বিশ্লেষণ শেষে আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরে মোবাইল ইন্টারনেটের একটি যৌক্তিক একক রেট নির্ধারণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।