বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ এক রেট’ ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে বিটিআরসি’র প্রধান সম্মেলন কক্ষে ‘ব্রডব্যান্ড পলিসিতে নারী, প্রতিবন্ধী, যুব, বাস্তুচ্যুত এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থবহ কানেক্টিভিটি নিশ্চিতকরণের’ লক্ষ্যে আয়োজিত ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ফাইভ-জি ইন্টারনেট সেবা চালু হলে মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মধ্যে পার্থক্য কমে যাবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ এক রেট’ ব্যবস্থা চালু করা হবে।
সমাজের অনগ্রসর নারী, প্রতিবন্ধীর ক্ষেত্রে সুলভে ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণসহ নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিতে সম্মিলিতিভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অন্যতম উপাদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে ইন্টারনেট প্রযুক্তি আসার ২৫ বছর পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ‘এক দেশে এক রেট‘ ট্যারিফ চালুর ফলে শহর ও গ্রামে একক মূল্যে গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছে।
এসময় স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ‘এক দেশ এক রেট’ চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এছাড়া সাশ্রয়ী স্মার্ট ডিভাইস নিশ্চিতে বিটিআরসি কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য কানেক্টিভিটি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এফরএআইয়ের হেড অব এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্জু মঙ্গল বলেন, ব্রডব্যান্ড পলিসিতে সবার জন্য ইন্টারনেট সহজলভ্যতা, সাশ্রয়ী ডিভাইস ও সুলভে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত থাকলে সব শ্রেণির মানুষের জন্য কানেক্টিভিটি পাওয়া সহজ হবে।
আলোচনায় উইমেন ইন ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া নীলা বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে আর নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি মেলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন হয়। দেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য ডিজিটাল কানেক্টিভিটির প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ডিভাইস ও ইন্টারেনেট সহজলভ্যতা, সহজে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি প্রাপ্তি, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও দক্ষতা, অবকাঠামো সুবিধা, ভাষা ও কনটেন্ট স্থানীয়করণ, সচেতনতা ও লিঙ্গ বৈষম্য।
কানেক্টিভিটি করোনাকালে মানুষের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জানিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নোভা আহমেদ বলেন, প্রযুক্তির জন্য প্রশিক্ষণ তথা ডিজিটাল লিটারেসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের দোড়গোড়ায় প্রযুক্তি পৌঁছানোর পাশাপাশি সাশ্রয়ী স্মার্ট ডিভাইস নিশ্চিত করতে হবে।
এটুআইয়ের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ভাস্কর চ্যাটার্জি বলেন, নারী ও প্রতিবন্ধীসহ দেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য আলাদা প্যাকেজ চালুসহ যারা এখনও তথ্যপ্রযুক্তিতে সংযুক্ত নয়, তাদের জন্য কানেক্টিভিটি বাড়াতে স্মার্টফোন সহজলভ্য করতে হবে।
আইএসপিএবি প্রতিনিধি বলেন, গ্রাহকের জন্য অল্প ব্যান্ডউইথের দীর্ঘ মেয়াদী ইন্টারনেট প্যাকেজ থাকা দরকার, তা না হলে প্রান্তিক ও কম আয়ের মানুষ ইন্টানেটে যুক্ত হতে পারবে না।
এছাড়া ওটিটি প্লাটফর্মের আলাদা নীতিমালা থাকার দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, বিটিআরসি’র সচিব মো. নূরুল হাফিজসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, শিক্ষাবিদ, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, আইএসপিএবি এবং টেলিকম সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।