জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর কাছে সরকারের ১৩ হাজার ৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৯৩৪ টাকা পাওনা বলে সংসদে তথ্য দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এর মধ্যে গ্রামীণ ফোনের কাছে বকেয়া ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা। আর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের কাছে সরকারের পাওনা এক হাজার ৬৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের (বাবলা) প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান মন্ত্রী ।
তিনি বলেন, গ্রামীণফোনের অডিট আপত্তির টাকার পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা। এর মধ্যে পরিশোধ করেছে দুই হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বকেয়ার পরিমাণ ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ টাকা।
রবি আজিয়াটার কাছে সরকারের পাওনা ছিল ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা। এর মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। তাদের বকেয়া ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৬ টাকা।
বন্ধ হয়ে যাওয়া প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকমের (সিটিসেল) কাছে সরকারের পাওনা ১২৮ কোটি ছয় লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা।
টেলিটকের কাছে পাওনা এক হাজার ৬৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে থ্রিজি স্পেকটার্ম ফি বাবদ এক হাজার ৫৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা ইক্যুইটিতে কনভার্সনের রূপান্তরের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
গ্রামীণফোন, রবি ও সিটিসেলের বকেয়া নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে বলেও সংসদে তথ্য দেন মন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার জানান, ২০১২ সালে দেশে মোবাইল গ্রাহক ছিল আট কোটি ৬৬ লাখ। ২০২২ সালে তা বেড়ে ১৮ কোটি ৩৪ লাখ হয়েছে।
২০১২ সালে দেশে থ্রিজি ও ফোরজি সেবা ছিল না। বর্তমানে থ্রিজি গ্রাহক তিন কোটি ১৯ লাখ এবং ফোরজি সাত কোটি ৫৪ লাখ।
মন্ত্রী জানান, ২০১২ সালে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল দুই কোটি ৮৯ লাখ, এখন তা বেড়ে ১২ কোটি ৪২ লাখ হয়েছে।
২০১২ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিল ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ, এখন টেলিডেনসিটি ১০৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ওই সময় ইন্টারনেট ডেনসিটি ছিল ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ; এখন বেড়ে ৭১ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, “মোবাইল ফোনে কল ড্রপ ও নেটওয়ার্কের সমস্যা একটি বড় সংকট। এমন কেউ নেই যিনি কল ড্রপের শিকার হননি। অনেক জায়গায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।”
তিনি বলেন, “ফোন অপারেটেরগুলোর গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গ্রামীণফোনের গ্রাহক আট কোটির বেশি, রবির গ্রাহক পাঁচ কোটির বেশি। গ্রাহক অনুযায়ী অপারেটরগুলোর যে পরিমাণ তরঙ্গ নেওয়া দরকার তারা তার তিন ভাগের এক ভাগও নেয়নি। সরকারের চাপে গত মার্চে তরঙ্গ বাড়িয়েছে।
আগামী ডিসম্বরের মধ্যে এই তরঙ্গ সম্পূর্ণ সম্প্রসারণ করা হলে সমস্যা অনেকটা সমাধান হবে। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তরঙ্গ সম্পূর্ণ সম্প্রসারণ করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, জরিমানা করার সুযোগ আছে।”
কিন্তু জরিমানা বা কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে কোম্পানিগুলো আদালতে যায় জানিয়ে, বিষয়টিকে একটি ‘সমস্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেন মোস্তাফা জব্বার।
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য নূর উদ্দিন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণফোনের মার্কেট শেয়ার বেশি থাকায় সব অপারেটরদের একই কলরেট নির্ধারণ করা হলে গ্রামীণফোনের সেবার প্রতি গ্রাহক আকর্ষণ বেড়ে যাবে। ফলে তার মার্কেট শেয়ার আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এ অবস্থায় ছোট অপারেটরদের মার্কেট এর অবস্থান বাধাগ্রস্ত হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।