Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home মক্কায় যখন হাম..লা হয়েছিল
    আন্তর্জাতিক

    মক্কায় যখন হাম..লা হয়েছিল

    November 22, 202411 Mins Read

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেটা ছিল মহরমের প্রথম দিন, তারিখটা, ১৯৭৯ সালের ২০ নভেম্বর। স্থানীয়দের পাশাপাশি পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো ও ইয়েমেন থেকে আসা হজযাত্রীদের ভিড়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল মক্কার সবচেয়ে বড় মসজিদ। খবর বিবিসি’র।

    Advertisement

    Mocca

    এই ভিড়ের মধ্যে কিছু বিদ্রোহীও উপস্থিত ছিলেন, তাদের মাথায় বাঁধা ছিল লাল রঙের চেক কাটা কাপড়। এদের মধ্যে কয়েকজন বেশ কয়েকদিন ধরেই মসজিদের ভেতরের নক্সা বুঝে নিচ্ছিলেন- কোনদিকে দালান রয়েছে আর কোনদিকে রাস্তা।

    এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সেইদিনই গাড়িতে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মক্কায় পৌঁছেছিলেন, যাতে তাদের বিষয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের মনে কোনোরকম সন্দেহ তৈরি না হয়। এদের অধিকাংশই সৌদি আরবের বেদুইন ছিলেন।

    এদিকে ততক্ষণে ফজরের নামাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। মাইক্রোফোনে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল ইমামের কণ্ঠস্বর। সময় তখন ভোর ৫টা ১৮।

    ইয়ারোস্লাভ ত্রফিমভ তার ‘দ্য সিজ অব মক্কা: দ্য ফরগটেন আপরাইজিং ইন ইসলামস হোলিয়েস্ট স্রাইন’ বইয়ে এই পুরো ঘটনার বর্ণনা করেছেন।

    তিনি লিখেছেন, “যেই মুহূর্তে নামাজ শেষে ইমাম সাহেব কালমা পড়তে শুরু করেন, সেই মুহূর্তেই গুলির শব্দ শোনা যায়। বাকরুদ্ধ হয়ে সবাই দেখে হাতে রাইফেল নিয়ে এক যুবক দ্রুত কাবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”

    “এরপর দ্বিতীয় গুলির শব্দ শোনা যায় আর মসজিদের বাইরে শষ্যদানা খেতে আসা শত শত পায়রা হাওয়ায় উড়তে শুরু করে।”

    হামলাকারীদের নেতা জুহায়মান আল-ওতায়বি
    মসজিদে উপস্থিত পুলিশ বাহিনীর কাছে বিদেশ থেকে আসা হজযাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অস্ত্র বলতে ছোটখাটো লাঠি ছিল। গেটে মোতায়েন দুই রক্ষীকে গুলি করা মাত্রই লাঠি হাতে ধরা পুলিশ লাপাত্তা হয়ে যায়।

    চারিদিকে হইচইয়ের মাঝেই আক্রমণকারীদের নেতা জুহায়মান আল-ওতায়বি এগিয়ে আসেন।

    ‘ইভেন্টস অ্যাট দ্য স্রাইন বিটুইন ট্রুথ অ্যান্ড লাইজ’ বইয়ে লেখা হয়েছে- “বছর ৪৩-এর বেদুইন জুহায়মানের চোখ ছিল কালো। কাঁধ পর্যন্ত থাকা কালো চুল তার কালো দাড়ির সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল। রোগা-পাতলা হওয়া সত্ত্বেও তার চেহারা থেকে ব্যক্তিত্ব ঠিকরে পড়ছিল। তার পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী সাদা সৌদি পোশাক যা পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত নেমে এসেছিল।”

    “মাথায় কিছু ছিল না, তবে চুল যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় তার জন্য একটা সবুজ ব্যান্ড ছিল। সঙ্গে ছিল রাইফেল, পিস্তল ও খঞ্জর হাতে তিনজন আক্রমণকারী। তারা সবাই দ্রুত গতিতে পবিত্র কাবা ও মসজিদের ইমামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।”

    সব দ্বারই রুদ্ধ
    ইমামের নজর জুহায়মান আল-ওতায়বি ও তার সঙ্গীদের দিকে গেলে মনে পড়ে ইসলাম সম্পর্কে তার (ইমামের) এক অনুষ্ঠানে এরা সকলেই উপস্থিত ছিলেন।

    সাংবাদিক ও লেখক ইয়ারোস্লাভ ত্রফিমভ লিখেছেন, “কয়েক সেকেন্ড পরে, ইমামকে ধাক্কা দিয়ে তার মাইকটা ছিনিয়ে নেয় জুহায়মান আল-ওতায়বি। ইমাম মাইক নেওয়ার চেষ্টা করলে, হামলাকারীদের মধ্যে একজন চিৎকার করে তার মুখে খঞ্জর দিয়ে আঘাত করে।”

    “হাজার হাজার হজযাত্রী এই দৃশ্য দেখে জুতো হাতে নিয়ে বাইরের গেটের দিকে ছুটে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তারা দেখেন ৫১টা গেটই বন্ধ। নিরুপায় হয়ে তারা উচ্চস্বরে আল্লাহ হু আকবর বলতে শুরু করেন। বন্দুকধারীরাও তাদের সঙ্গে গলা মেলান। পুরো কাবা শরীফ জুড়ে তা প্রতিধ্বনিত হয়।”

    মিনারে অবস্থান নেয় আক্রমণকারীরা
    এই রব থেমে গেলে, জুহায়মান আল-ওতায়বি মাইক্রোফোনের মাধ্যমে তার দলের লোকেদের নির্দেশ দিতে শুরু করেন। তার আওয়াজ শুনে, দলের লোকেরা পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে পড়ে। তারা মসজিদের সাতটা মিনারে মেশিনগান ফিট করে দেয়।

    আটকে পড়া হজযাত্রীদের বাধ্য করা হয় তারা যাতে আক্রমণকারীদের সাহায্য করেন। উপস্থিত ব্যক্তিদের কাউকে কাউকে আবার সেখানে বিছানো কার্পেট দিয়ে শরীর মুড়ে নিয়ে শিকল বাঁধা গেটের কাছে দাঁড়িয়ে পড়তে বলা হয়।

    ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের দিকে বন্দুক তাক করে বলা হয় তারা যেন মিনারে উঠে বিদ্রোহীদের খাবার ও অস্ত্র পৌঁছে দেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ইসলামের পবিত্রতম স্থানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় আক্রমণকারীরা।

    এই মিনারগুলোর উচ্চতা ৮৯ মিটার (২৯২ ফুট) যেখান থেকে পুরো মক্কা পর্যবেক্ষণ করা যায়।

    মি. আল-ওতায়বি নির্দেশ দেন, “যদি সরকারের কোনও সৈন্য তোমার দিকে হাত তোলে, তবে তাকে দয়া দেখিও না, তাকে গুলি করতেও দ্বিধা করবে না।”

    আটকে থাকা হজযাত্রীদের অনেকেই আরবি বুঝতেন না। তারা স্থানীয় ব্যক্তিদের অনুরোধ করেন বিষয়টা কী হচ্ছে বুঝিয়ে বলার জন্য।

    আক্রমণকারীরা ভারতীয় ও পাকিস্তানি হজযাত্রীদের একটা দল গঠন করে মসজিদের এক কোণে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করায়। তাদের উদ্দেশ্য করে একজন উর্দুভাষী ব্যক্তি বিদ্রোহীদের সমস্ত ঘোষণা উর্দুতে অনুবাদ করতে থাকে।

    আফ্রিকা থেকে আসা ব্যক্তিদের জন্য একজন ইংরেজি জানা অনুবাদকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

    সৌদি আরবে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন সি ওয়েস্ট মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে টেলিগ্রাম মারফত জানান, “মসজিদের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের মাধ্যমে আক্রমণকারীরা জানিয়েছে যে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দা তাদের নিয়ন্ত্রণে।”

    শেষ বিচারের সময় ঘনিয়ে এসেছে
    পরের এক ঘণ্টা ধরে হামলাকারীরা মসজিদের লাউডস্পিকার ব্যবহার করে বিশ্বের সমস্ত মুসলমানদের কাছে একটা পুরানো ভবিষ্যদ্বাণী পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে থাকে, যেখানে বলা হয়- শেষ বিচারের দিন ঘনিয়ে এসেছে এবং মাহদী আসছেন।

    গোলাগুলির মাঝেই যখন এই ঘোষণা শেষ হয়, ততক্ষণে কেন্দ্রীয় মক্কায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘোষণা শুনে মসজিদের বাইরে কর্মরত লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়।

    সৌদি আরব এবং তার বাইরে বসবাসরত মুসলমানরা এই ঘোষণা শুনে মর্মাহত হন।

    পরে সৌদি আরবের তৎকালীন প্রিন্স ফাহাদ লেবাননের ‘আল-সাফির’ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “জুহায়মান আল-ওতায়বি ও তার সহযোগীরা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সান্ত্রীদের ৪০ হাজার রিয়াল ঘুস দিয়েছিল, যাতে অস্ত্র ও খাবার ভর্তি তিনটে টয়োটা ডাটসন ও জিএমসি পিকআপ ট্রাক মসজিদের ভেতরে আসতে পারে। এই পিকআপ ট্রাক মসজিদের বেসমেন্টে রাখা ছিল।”

    মাহদীর আগমন
    মসজিদ নিজেদের দখলে নেওয়ার পর মি. আল-ওতায়বি নিশ্চিত করেছিলেন যাতে প্রত্যেকটা (মসজিদের) প্রবেশদ্বারের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে।

    তারপর উপস্থিত ব্যক্তিদের জানানো হয়, যে মাহদীর জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা ছিল, তিনি চলে এসেছেন। জুহায়মান আল-ওতায়বি জানান, সেই মাহদীর নাম মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল কুরেশি।

    শেষ বিচারের আগে সমস্ত অন্যায় দূর করে ‘সত্য ধর্ম’ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য মাহদী পৃথিবীতে অবতরণ করবেন বলে ধারণা করা হয়।

    ইয়ারোস্লাভ ত্রফিমভ লিখেছেন, “একে একে জুহায়মানের সমস্ত বন্দুকধারী সঙ্গী মোহাম্মদ আবদুল্লাহর হাতে চুম্বন করে এবং তার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেয়। এর পর রাইফেল ভর্তি ক্রেটটা চত্বরের একেবারে মাঝখানে নিয়ে আসেন তিনি। সেই রাইফেল তুলে দেওয়া হয় জুহায়মানের সঙ্গী এবং সেই সমস্ত হজযাত্রীদের যারা বিদ্রোহকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।”

    অস্ত্র ছাড়াও, কুয়েতে মুদ্রিত প্রচারপত্রও বিতরণ করা হয় যেখানে জুহায়মানের লেখা নিবন্ধ ছিল।

    মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল কুরেশিকে হজযাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করেন এই বিদ্রোহের পিছনে ইরান রয়েছে কি না।

    তিনি এক কথায় বলেছিলেন, “না।”

    পুলিশের উপর গুলি
    রাত আটটার দিকে মক্কা পুলিশ প্রথম সিদ্ধান্ত নেয় এই পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুলিশের জিপ পাঠানো হয়।

    সেই জিপ গেটের কাছে পৌঁছানো মাত্রই বুলেট বৃষ্টি শুরু হয়। মিনারের উপর থেকে ছোড়া বুলেটে জিপের উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। জিপের চালক আহত হয়ে গাড়ি থেকে নিচে পড়ে যান।

    কিছুক্ষণ পর মসজিদের দ্বিতীয় গেটে পাঠানো হয় জিপের বড় বহর। মিনার থেকে এই কনভয় লক্ষ্য করেও গুলি চালায় হামলাকারীরা। এর ফলে ঘটনাস্থলেই আটজন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয় ও ৩৬ জন আহত হন।

    পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে মসজিদের বাইরের দেয়ালে আশ্রয় নেয়।

    হামলাকারীরা যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন সৌদি বাদশাহ খালেদ রিয়াদস্থিত তার প্রাসাদে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। প্রিন্স ফাহাদও সে সময় দেশে ছিলেন না। তিউনিসের একটা হোটেলে ঘুমিয়ে ছিলেন। ন্যাশনাল গার্ডের কমান্ডার প্রিন্স আবদুল্লাহও সৌদি আরবে ছিলেন না। মরক্কোতে ছুটি কাটাচ্ছিলেন।

    বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
    বাদশাহ খালেদকে এই বিষয় প্রথম জানান মক্কা ও মদিনা মসজিদের ইনচার্জ শেখ নাসের ইবনে রাশেদ।

    দুপুরের মধ্যে সৌদি আরবে আন্তর্জাতিক ফোন কল পরিচালনাকারী কানাডিয়ান সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয় সম্পূর্ণ যোগাযোগ ‘ব্ল্যাক আউট’ করে দিতে।

    ফলে কেউই সৌদি আরবে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি, টেলিগ্রামও পাঠানো সম্ভব হয়নি।

    দেশের সীমান্ত সৌদি নন, এমন ব্যক্তিদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। কার্যত বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সৌদি আরব।

    সৌদি রেডিও ও টেলিভিশনেও এই ঘটনার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

    এই সময় সৌদি সেনার সঙ্গে আক্রমণকারীদের থেমে থেমে গোলাগুলি বিনিময় চলতে থাকে। তাদের (আক্রমণকারীদের) মধ্যে বেশিরভাগই মসজিদের নিচের অংশে ঢুকে যায়।

    মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল কুরেশি কিন্তু উপরেই থেকে যান। সৌদি সেনারা গ্রেনেড ছুড়ে সামনে আসা বাধা দূর করছিল।

    ইয়ারোস্লাভ ত্রফিমভ লিখেছেন, “যখনই আবদুল্লাহ মার্বেলের মেঝেতে গ্রেনেড পড়ার শব্দ শুনতে পান, তিনি তৎক্ষণাৎ দৌড়ে গিয়ে সেই একই গ্রেনেড তুলে সৈন্যদের দিকে ছুড়ে মারতে থাকেন। যারা গ্রেনেড নিক্ষেপ করছিল, সেই গ্রেনেডই তাদের দিকে পাল্টা ছুড়ে বহুবার হামলা করেন।”

    “কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় ছিল না তার। এইভাবে সৈন্যদের ছোড়া গ্রেনেড তাদেরই তাক করে মারার সময় বিস্ফোরণ হয় এবং আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়। শেষ মুহূর্তে কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। সেই অবস্থাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।”

    কমান্ডো পাঠায় ফ্রান্স
    সৌদি আরবের অনুরোধে, ফ্রান্সের জিআইজিএন কমান্ডোদের পাঠানো হয়েছিল সৌদি সৈন্যদের সাহায্য করতে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই কমান্ডোদের।

    ১৯৭৬ সালে জিবুতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি থাকা বাচ্চাদের একটা স্কুল বাস উদ্ধার করেছিল ওই কমান্ডোরা। যারা শিশুদের জিম্মি করেছিল তাদের প্রথমে মাদকযুক্ত খাবার দেওয়া হয়। পরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে কমান্ডোরা। সেই অভিযানে সব শিশুদের নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছিল।

    সৌদি আরবের কাছ থেকে অনুরোধ আসার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ভ্যালেরি গিসকা ডি অ্যাস্টন জিআইজিএন প্রধান ক্রিস্টিয়ান প্রোটিয়াকে নির্দেশ দেন যাতে ওই দেশকে সম্ভাব্য সমস্তরকম সাহায্য করা হয়।

    মি. প্রোটিয়া এই অভিযানের দায়িত্ব দেন পল বারিলের হাতে। এর জন্য কাঁদানে গ্যাসের পরিবর্তে সিবি কেমিক্যাল ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন পল বারিল। প্রশিক্ষণের সময় নিজের উপর ব্যবহার করার পর কোনোমতে অন্ধ হওয়া থেকে বেঁচেছিলেন তিনি।

    সাদা কাপড়ে অভিযানে শামিল কমান্ডো
    পল বারিলের নেতৃত্বে তার টিম মিস্টিয়ার-২০ বিমানে চড়ে সাইপ্রাস হয়ে রিয়াদে পৌঁছায়।

    সৌদিরা আশা করেছিল ফ্রান্স এই অভিযানের জন্য একটা বড় দল পাঠাবে, কিন্তু তারা অবাক হয়ে দেখে মি. বারিলের দলে মাত্র তিনজন রয়েছেন।

    পরবর্তীকালে তার আত্মজীবনী ‘ভেরি স্পেশাল মিশনস’-এ লিখেছেন, “গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য আমাকে ও আমার সহকর্মীদের ফরাসি দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দিতে হয়েছিল। আমি সাধারণ মানুষের মতো বেল বটম এবং কাউবয় বেল্ট পরেছিলাম। আমাদের নিরাপত্তার জন্য কোনও অস্ত্রও ছিল না।”

    “আমাদের অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অন্য কোনো উপায় ছিল না। সৌদি টেলিফোনের উপর আমাদের ভরসা করতে হয়েছিল। বাইরের সকলের কাছে আমাদের তিনজনের পরিচয় ছিল ব্যবসায়ী হিসাবে। তবে আমাদের প্রশস্ত কাঁধ এবং পেশিবহুল দেহ কিন্তু অন্য কথা বলছিল।”

    মধ্যরাতে ফরাসি কমান্ডোর ওই দল তায়েফ সামরিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তায়েফের ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক হোটেলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

    এক টন সিবি কেমিক্যালের চাহিদা
    অভিযানের জন্য পরদিন থেকেই সৌদি কমান্ডোদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। পল বারিল আশা করছিলেন, তিনি নিজে মক্কায় গিয়ে মসজিদের বাইরে এই অভিযানে নেতৃত্ব দেবেন।

    তার আত্মজীবনীতে মি. বারিল লিখেছেন, “একজন সৌদি কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, মক্কায় যেতে হলে আপনাকে ইসলাম গ্রহণ করতে হবে। কারণ সেখানে অন্য ধর্মের লোকদের প্রবেশের অনুমতি নেই।”

    “আমি একজন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী এবং সেই সময় ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। কিন্তু কাজ শেষ করতে হলে যদি ধর্ম পরিবর্তন করতে হয় তাহলে আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিই।”

    হোটেলে পৌঁছে পল বারিল তার বসকে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর তালিকা পাঠান। এই তালিকায় ছিল ফ্লেক জ্যাকেট, গ্রেনেড, স্নাইপার রাইফেল, ফিল্ড রেডিও, নাইট ভিশন গগলস এবং এক টন সিবি রাসায়নিক।

    এত পরিমাণ সিবি রাসায়নিকের চাহিদা শুনে মি. প্রোটিয়া অবাক হয়ে যান। কারণ ওই পরিমাণ রাসায়নিক দিয়ে পুরো শহর নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    ইয়ারোস্লাভ ত্রফিমভ লিখেছেন, “নিষেধ সত্ত্বেও বারিল ও তার দুই সঙ্গী শুধু মক্কাতেই যাননি, অভিযানের আগে মসজিদেও প্রবেশ করেছিলেন। তবে ফ্রান্সের তরফে পরে ব্যাখ্যা করা হয় যে এই অভিযানে তাদের ভূমিকা কেবল সরঞ্জাম সরবরাহ এবং তায়েফে সৌদি কমান্ডোদের প্রশিক্ষণ দেওয়া পর্যন্ত ছিল। তারা জানিয়েছিল, অভিযানের সময় বারিল ও তার সহকর্মীরা পবিত্র ভূমি মক্কায় পা রাখেননি।”

    মি. বারিলের পরিকল্পনা অনুসরণ করে পাকিস্তানি ও তুর্কি শ্রমিকরা মসজিদে গর্ত খুঁড়তে শুরু করে।

    ফ্রান্সের তরফে পাঠানো মাস্ক ও বিশেষ স্যুট পরে সৌদি সেনারা সিবি ক্যানিস্টার নিক্ষেপ করতে থাকে। যেহেতু রেডিও সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছিল না, তাই প্রথম বিস্ফোরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিবি লঞ্চারের ট্রিগার করার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই রাসায়নিক পদার্থ মুহূর্তে তার প্রভাব দেখাতে শুরু করে। কাবায় আক্রমণকারীরা ওই রাসায়নিকের বিষাক্ত ধোঁয়ার কবলে পড়েন।

    ঠিক যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ওই রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে মসজিদে আক্রমণকারী বিদ্রোহীদের গতি ধীর হয়ে যায় এবং সৌদি সেনারা তাদের সামনে রাখা বাধা ও কাঁটাতার ভেঙে ভিতরে (মসজিদের) প্রবেশ করে।

    তারা একে একে মসজিদের প্রতিটা কক্ষে ঢুঁ মেরে সেগুলো নিজেদের দখলে নিতে থাকে। সেখান থেকে যাদের জীবিত পাওয়া গিয়েছিল তাদের ৪০ সদস্যের একটা টিমের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই টিমের দায়িত্ব ছিল গ্রেফতার করা।

    গ্রেফতার জুহায়মান
    এরপর চৌঠা ডিসেম্বর সৌদি আরবের তৎকালীন অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী শাহজাদা নায়েফ এক বিবৃতিতে জানান, “আল্লাহর রহমতে আজ দেড়টায় আক্রমণকারীদের কবল থেকে মসজিদকে মুক্ত করা হয়েছে।”

    সৌদি সেনারা বিস্ফোরক লাগিয়ে কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ্টেন আবু সুলতানের নেতৃত্বে সৈন্যরা সেখানে ‘মোপিং অপারেশন’ শুরু করে।

    পরে ক্যাপ্টেন আবু সুলতান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা এক ব্যক্তিকে দেখি যার চোখ জ্বলছিল। তার চুল ও দাড়ি এলোমেলো ছিল। তার কাছেই ছিল অস্ত্রের বাক্স, বাসনপত্রে রাখা খেজুর এবং কিছু প্রচার বিষয়ক কাগজপত্র। আমি তার দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেছিলাম -তোমার নাম কী? ও নিচু গলায় জবাব দিয়েছিল- জুহায়মান।”

    ক্যাপ্টেন সুলতান বলেন, “আমার আশঙ্কা ছিল আমাদের সৈন্যরা ওকে মেরে না ফেলে। দু’জন অফিসারকে দিয়ে তাকে দিয়ে ঘিরে ধরে উপরে এনে সেখানে পার্ক করা অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিই আমি। অ্যাম্বুলেন্স করে তাকে সেখান থেকে সোজা মক্কা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।”

    যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় কেন তিনি এই কাজ করলেন, তখন তার উত্তরে জুহায়মান বলেছিলেন, “এটাই আল্লাহর ইচ্ছা ছিল।”

    একজন সৌদি সেনা জুহায়মানের দাড়ি ধরে টান দিতে থাকে। এটা লক্ষ্য করে দেখে সেখানে উপস্থিত এক রাজপুত্র ওই সৈন্যকে বাধা দেন।

    ৬৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
    ওই ঘটনায় ৭৫ জন বিদ্রোহী আক্রমণকারীর মৃত্যু হয় এবং ১৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

    ১৯৮০ সালের নয়ই জানুয়ারি সৌদি আইন অনুযায়ী এদের মধ্যে ৬৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সবার প্রথমে মক্কায় জুহায়মানের মাথা কেটে ফেলা হয়।

    দোকানে চুরির অভিযোগে রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

    এর কয়েক মিনিট পর একই জায়গায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল কুরেশির ভাই সঈদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৯ জন সৌদি, ১০ জন মিশরীয় এবং ছয়জন ইয়েমেনের নাগরিক ছিলেন।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    আন্তর্জাতিক মক্কা মক্কায় যখন হয়েছিল হাম..লা
    Related Posts
    Village

    ভারতের এই গ্রামে শুধুমাত্র পুরুষরাই থাকেন, একজনও মেয়ে নেই

    June 24, 2025
    Donald Trump

    ইরানে ‘আর বোমা ফেল না’, ইসরাইলকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প

    June 24, 2025
    ইসরায়েল-ইরান

    ট্রাম্পের অনুরোধে ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছে কাতার: রয়টার্সের প্রতিবেদন

    June 24, 2025
    সর্বশেষ খবর
    প্রতিদিন সকালে উঠে ১০ মিনিট এই কাজ করলেই বদলে যাবে জীবন

    প্রতিদিন সকালে উঠে ১০ মিনিট এই কাজ করলেই বদলে যাবে জীবন

    Laptop

    নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমে হুয়াওয়ের ফোল্ডেবল ল্যাপটপ : নতুন যুগের সূচনা?

    Trust Bank

    প্রয়াস-এর রাজশাহী ও সিলেট শাখায় স্কুল বাস প্রদান করল ট্রাস্ট ব্যাংক

    Daripalla

    দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পেল জামায়াতে ইসলামী

    বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারে যেসব মানসিক সমস্যা হতে পারে

    বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারে যেসব মানসিক সমস্যা হতে পারে

    সফল মানুষেরা সকালেই যেসব কাজ করে থাকেন—জানুন সফলতার রুটিন

    সফল মানুষেরা সকালেই যেসব কাজ করে থাকেন—জানুন সফলতার রুটিন

    Manikganj

    মানিকগঞ্জে শিশুশ্রম মুক্তি পেল ৬১ শিশু, ক্লাসরুমে ফিরেছে ১২ জন

    মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন মেনে চলুন এই ৫টি অভ্যাস

    মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন মেনে চলুন এই ৫টি অভ্যাস

    মশা-

    কোন রঙের কাপড় পড়লে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়

    নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে প্রতিদিন এই ৫টি কথা নিজেকে বলুন

    নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে প্রতিদিন এই ৫টি কথা নিজেকে বলুন

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.