আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নির্বাচনের আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দায়িত্ব পাওয়ার প্রথম দিনই ভারতীয় সেনাদের দেশ থেকে তাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করবেন। শপথ নেওয়ার কয়েক দিন না যেতেই দিল্লিকে অনুরোধ করেছেন তাদের সেনা সরিয়ে নিতে। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসতে হলো মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে চলছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ–২৮। এই সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। ওই বৈঠকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয় আলোচনা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এমনকি কোনো দেশও এ নিয়ে কিছু জানায়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার বলছে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সম্প্রতি এক বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজোকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন মুইজ্জু। এবার মোদি–মুইজ্জু বৈঠকের ফল এ নিয়ে কিনা, তা জানায়নি মালদ্বীপ।
তবে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে মালদ্বীপ। দেশটি বলছে, দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে সবচেয়ে বড় যে সিদ্ধান্ত এসেছে তা হচ্ছে, একটি ‘কোর গ্রুপ’ গঠন করা। যাকে বলা হচ্ছে ‘হাই লেভেল কমিটি’। এই হাই লেভেল কমিটি উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবে। এ ছাড়া দুই দেশের মানুষের মধ্যেও যোগসূত্র স্থাপণ করবে।
ভারতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত–মালদ্বীপ সম্পর্ক কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। আর এই আলোচনার পরই ‘কোর গ্রুপের’ বিষয়টি আসে। তবে এ নিয়ে আর বিস্তারিত জানানো হয়নি।
নির্বাচিত হওয়ার পরেই ভারতীয় সেনাদের দেশ থেকে তাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মইজ্জু। ক্ষমতায় আসার পর আবারও দেশ থেকে বিদেশি সেনাদের বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গত মাসে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ প্রতিশ্রুতি দেন চীনপন্থী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রোগ্রেসিভ পার্টি অব দ্য মালদ্বীপের (পিপিএম) নেতা মুইজ্জু বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রেখা স্পষ্টভাবে আঁকা হবে। বিদেশী সামরিক উপস্থিতি অপসারণ করা হবে। আমি বিদেশি দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখব। কাছের ও দূরের দেশগুলোর সঙ্গে কোনো দূরত্ব তৈরি করব না।’
আঞ্চলিক পরাশক্তি চীন ও ভারত উভয়েই মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছে। নির্বাচনে মুইজ্জু মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) ভারতপন্থী নেতা সলিহকে পরাজিত করেছেন।
সলিহ’র বাণিজ্য নীতির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মুইজ্জু। নির্বাচিত হলে চীনের সঙ্গে বৃহত্তর অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। বিশ্লেষকরা বলেছেন, মুইজ্জুর ক্ষমতায় যাওয়ায় এই অঞ্চলে ধাক্কা খেতে হতে পারে ভারতকে।
মালদ্বীপে ভারতের ৭৫ সেনা সদস্য রয়েছে। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২১ হাজার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।