আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কয়েক বিলিয়ন বছর আগে চাঁদের রহস্যময়ী দূরবর্তী পৃষ্ঠে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। চীনের চাং’ই-৬ মিশনের সময় সংগৃহীত নমুনার বিশ্লেষণে ৪২০ কোটি বছরেরও বেশি সময় আগের আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে গঠিত ব্যাসল্ট শিলা পাওয়া গেছে। মার্কিন ও চীনা গবেষকদের যৌথ গবেষণায় এমনটি উঠে এসেছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নেচার এবং সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণা চাঁদের তুলনামূলক কম-আলোচিত ওই অঞ্চলের সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি খুলে দিয়েছে। পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান চাঁদের নিকটবর্তী পৃষ্ঠের আগ্নেয়গিরির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া গেলেও দূরবর্তী পৃষ্ঠটির ভিন্ন প্রকৃতি এখনো অনেকটাই অনাবিষ্কৃত।
চাং’ই-৬ মহাকাশযানের প্রায় দুই মাসব্যাপী ঝুঁকিপূর্ণ অভিযাত্রার সময় এই নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়। এই মিশনে প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। খবর এনডিটিভির।
বয়স নির্ধারণ এবং নবীন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ: রেডিওমেট্রিক ডেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে চীনা একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর নেতৃত্বাধীন গবেষক দল নমুনাগুলোর বয়স নির্ধারণ করেছেন। গবেষণায় ২৮৩ কোটি বছর আগেকার একটি ‘অবিশ্বাস্যভাবে নবীন’ আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা চাঁদের নিকটবর্তী বা পৃথিবীমুখী পৃষ্ঠে আগে কখনো হতে দেখা যায়নি।
জিওলজি এবং জিওফিজিক্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক কিউলি লি পিয়ার পর্যালোচনায় বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত রোমাঞ্চকর গবেষণা। চাং’ই-৬-এর নমুনাগুলোর প্রথম জিওক্রোনোলজিক্যাল বিশ্লেষণ এটি এবং এটি চন্দ্র ও গ্রহবিজ্ঞান গবেষণায় অসাধারণ অবদান রাখবে।’
‘ডার্ক সাইড’ বা ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃষ্ঠ’ সম্পর্কে ভুল ধারণা: চাঁদের এই অংশকে প্রায়ই ‘অন্ধকার পৃষ্ঠ’ বলা হলেও, এটি আসলে পৃথিবীর মতোই সূর্যের আলো পায়। একে ‘অন্ধকার’ বলা হয় শুধু এ কারণে যে এটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান নয়। চাঁদের আকর্ষণের কারণে পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা হয়ে থাকে। উপগ্রহটির একবার পৃথিবীর চারপাশ ঘুরতে প্রায় ২৭ দিন লাগে। এর বিশেষ আঙ্গিকের ঘূর্ণনের কারণে চাঁদের একই অংশ সবসময় পৃথিবীর দিকে থাকে।
চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠের প্রথম ছবি এবং সাম্প্রতিক সাফল্য: ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত মহাকাশযান লুনা-৩ প্রথম চাঁদের দূরবর্তী পৃষ্ঠের ছবি তুলতে সক্ষম হয়। তবে ছবিগুলো ছিল অস্পষ্ট। এরপর থেকে উচ্চ রেজোলিউশনের অনেক ছবি এবং ভিডিও নেয়া হয়েছে, এর মধ্যে নাসার একটি ভিডিওও রয়েছে যেখানে বিশালাকার পৃথিবীকে চাঁদের ঠিক পেছনে দেখা যায়।
এ বছর চাং’ই-৬ মিশনে একটি ছোট রোভার ব্যবহার করা হয়, যা চাঁদের পাথুরে পৃষ্ঠে ল্যান্ডারের একটি সেলফি ধারণ করেছে। এটি চাঁদ নিয়ে জানতে আরেকটি নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।