জুমবাংলা ডেস্ক : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মর্টারশেল বাংলাদেশের ভেতরে এসে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ।
এ ঘটনায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বুধবারও তারা তুমব্রু ও হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ও দুপুরে এবং বুধবার ভোরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের ঘুমধুমের তুমব্রু, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী আঞ্জুমানপাড়া, টেকনাফের হোয়াক্যং সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সিরাজুল মোস্তফা লালু জানান, মিয়ানমার অংশে গোলাগুলিতে তাদের সন্তানরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরেও টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে সীমান্তের কাছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখেছেন এলাকাবাসী।
উলুবনিয়া জামান সখিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরোজা খানম রাহি বলেন, আমার বাড়ি উলুবনিয়া গ্রামের সীমান্তের কাছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্তের কাছে গুলির শব্দ হলে ভয়ে স্কুলে যেতে পারি না। পড়াশোনা করতে পারি না।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের চলমান সংঘাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া মিয়ানমারে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় রাখাইন প্রদেশের সাধারণ জনগণ তীব্র খাদ্য সংকটে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার পথ খুঁজছে।
এরই প্রেক্ষিতে সীমান্তে সতর্কতা বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান ইতোপূর্বে দুদফায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। পরিদর্শনকালে তিনি সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন। গত ৮-১০ দিন থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলি হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে কী কারণে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে তা এখনো জানা যায়নি।
মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। কদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় ভারী অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলি এবং মর্টারশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আগুনের ধোঁয়া।
এর আগে ২০২২ সালেও মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘর্ষ হয়। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা ও মর্টারশেল বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ে। অবশ্য মিয়ানমার সেনারা এই ঘটনার দায় চাপায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।